পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক দি ফারমার্স ব্যাংক) অর্থ আত্মসাতের মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত এই রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে গত ৬ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ আসামি সাহেদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত সাহেদের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য আজ সোমবার দিন ধার্য করেন। এদিন রিমান্ড শুনানির সময় সাহেদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন।
তবে সাহেদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
গত ২৭ জুলাই দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ বাদী হয়ে সাহেদ, ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির সভাপতি মো. মাহবুবুল হক চিশতী, বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক চিশতি, রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ইব্রাহিম খলিলের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রিজেন্ট হাসপাতালের জন্য ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখা থেকে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে এমআরআই মেশিন কেনার জন্য দুই কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন করেন মো. সাহেদ। অথচ ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা ও ক্রেডিট রিস্ক গ্রেডিং নিরূপণ না করেই ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির সভাপতি মো. মাহবুবুল হক চিশতী ঋণ অনুমোদন করেন।
পরে ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি ২১তম সভায় সাহেদের অনুকূলে দুই কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন হয়। যা পে-অর্ডারের মাধ্যমে ও এমআরআই মেশিন কেনা হয়েছে এমন জাল কাগজপত্র দেখিয়ে ২১ জানুয়ারি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের উত্তরা মহিলা শাখার মাধ্যমে দুই কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়।
এদিকে, গত ২৬ জুলাই ঢাকা ও সাতক্ষীরায় দায়ের করা পাঁচ মামলায় সাহেদকে ফের মোট ৩৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর আগে গত ১৬ জুলাই সাহেদকে ১০ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।
গত ৬ জুলাই নানা অনিয়ম, প্রতারণা, সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ, করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট, সার্টিফিকেট দেওয়া ও রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের দু’টি হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরা পশ্চিম থানায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এরপর সবশেষ গত ১৫ জুলাই ভোরে র্যাবের বিশেষ অভিযানে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদীর তীর সীমান্ত এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।