আবু সাঈদ অপু :
ব্যাংকগুলোতে একের পর এক দুর্নীতি আর ঋণ জালিয়াতির কারনে ক্রমেই আস্থা হারাচ্ছে মানুষ। অধিকাংশ ঋণ খেলাপি কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর সাথে যোগসাজস করে মামলা করায়, টাকা উত্তোলন নিয়ে যেমন সৃষ্টি হয় জটিলতা; তেমনি আমানত খেয়ানতের শঙ্কায় গ্রাহকরা।
২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঋাণ খেলাপিসহ নানাবিধ কারনে বেশ অস্থিরতা ছিলো ব্যাংখাতে। বেসিক, কর্মাস, এবি, ন্যাশনাল, ফারমার্স ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের অনিয়ম ,দুর্নীতি ও ঋন জালিয়াতির ঘটনা গড়িয়েছে দুদক থেকে আদালত পর্যন্ত।
এমনি একটি এনআরবি কর্মাশিয়ার ব্যাংক। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করার পরে মাত্র ৩ বছরের মাথায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ২০১৬ সালে এনআরবিসির ৭০১ কোটি টাকা ঋণে গুরুত্বর অনিয়মের তথ্য বেড়িয়ে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকটিকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
আমানতকারীদের স্বার্থে ও জনস্বার্থে এনআরবিসি ব্যাংক চালাতে ব্যর্থ হয় ফরাসত আলীর নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ। প্রতারণা ও জালিয়াতি করায় ব্যাংক কোম্পানী আইনের ৪৬ ধারায় পরিপস্থি হওয়ায় এবং অনিয়ম দুর্নীতির ১০টি গুরুত্বর অভিযোগ প্রমানতি হওয়ায় ব্যাংকটির এমডি মুজিবুর রহমানকে অপসারণ করা হয়। পরে পদত্যাগ করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যানও।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে , মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসানের এজি এগ্রোকে পিন্সিপাল শাখা থেকে ১৮৩ কোটি টাকা ও নোয়াখালীর চন্দ্রগঞ্জ শাখা থেকে বেগমগঞ্জ ফিডের নামে ১১৮ কোটি টাকাসহ বিভিন্ন শাখায় ৭০১ কোটি টাকার ঋণ বিতরনে অনিয়মের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর এসব নিয়ে অর্থমন্ত্রনালয় সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এনআরবিসি ব্যাংকের অনিয়ম আলোচনায় উঠলে সংসদীয় কমিটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিচালকদের মধ্যে অন্তদ্বন্দ , ঋণ বিতরনে অনিয়ম ও ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রনহীনতা
সভায় অনুপস্থিত পরিচালকদের স্বাক্ষর জাল করা, নিয়মানাচার না মেনে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান, প্রবাসীর নাম ভাঙিয়ে বেনামে ব্যাংকের শেয়ার কেনাসহ ৬ পরিচালকের শেয়ার বাজেয়াপ্ত ও ৩ পরিচালককে অপসারণ করা হয়।এসব কর্মকান্ডকে কিভাবে দেখছেন অর্থনীতি বিদরা।
এর আগের বছর ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে গাজীপুরের আজিজ চৌধুরী এ্যান্ড ব্রাদাসের নামে গৃহনির্মাণ ঋন বাবদ ৫৭ কোটি টাকা ছাড় দেয়া হয়। এর আগেরও ব্যাংকের পিন্সিপাল শাখা থেকে জামানতের বিপরীতে আহসান গ্রুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে দুই ধাপে নিয়মবর্হিভূতভাবে ১৪০ কোটি টাকা ঋণ দেয়ার অনুসন্ধানে নামে দুনীতি দমন কমিশন।
অথচ ওই গ্রুপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংকে ৩০১ কোটি টাকা বকেয়া ঋণ ছিলো। ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল পারভেজ স্বীকার করেন অনিয়ম ও ঋণ জারিয়াতির বিষয়টি। সার্বিক পরিস্থিতিকে কিভাবে দেখছেন ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গর্ভনর।