নাহিদ কামাল : আন্দোলন, সংগ্রাম, নেতৃত্ব, আর মেধা গড়ার কারিগরের আরেক নাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এক টুকরো লাল সবুজের বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অনেক। দেশের সেরা বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন ধসের ঝুঁকি নিয়ে হলগুলোতে বসবাস করছে হাজারো শিক্ষার্থী। বিগত দিন গুলোতে প্রাণহানি সহ হতাহতের ঘটনা ঘটলেও পাল্টায়নি দৃশ্যপট। ডাকসু নেতারা দ্রুত কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানিয়েছেন।
আর উপাচার্য বলছেন শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় নতুন হল নির্মানসহ নেয়া হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা।
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ হলেও আলো আঁধারের গল্প টিমের অনুসন্ধানী চোখ আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের অবব্যস্থাপনার দিকে। তার আগে একটু ঘুরে আসা যাক বিগত দিন গুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের অবহেলায় কিভাবে বলি হতে হয়েছে হলের শিক্ষার্থীদের, সেই প্রেক্ষাপটে।
১৫ অক্টোবর ১৯৮৫, যে রাতে ধসে পড়েছিলো জগন্নাথ হলের টিভি রুমের ছাদ। আর মুহুর্তেই প্রাণ হারায় ৩৯ জন। নিহতদের স্মরণে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা এই অক্টোবর স্তম্ভটি শিক্ষার্থীদের কাছে এক বিভিষিকার প্রতিক।
শহীদুল্লাহ হলের বয়স ৯৭ বছর, জহুরুল হক হল ৬০, মুহসীন হল ৫০ এবং সূর্যসেন হল পা রেখেছে ৫৮ বছরে। বাইরে এসব হলের চাকচিক্য থাকলেও ভেতরে গেলে যে কারোরই চোখ কপালে উঠবে।
সংস্কারের অভাব, প্রশাসনের অনীহাসহ নানা কারণে এই সব হল এখন মৃত্যুকুপ। এ অবস্থায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে বছরের পর বছর হলগুলোতে বসবাস করছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
এই দৃশ্য দেখে অনেকে ভাবতে পারেন, বিশ্ববিদ্যালয় হল জীবন কতই না মধুর। কিন্তু এর আড়ালে লুকিয়ে থাকা নির্ঘুম রাতের সাতকাহন কয়জনই বা রাখে।
এই ছবিকে রাতের ঢাকার ফুটপাথের দৃশ্য ভাবলে ভুল করবেন অনেকে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের রাতের দৃশ্য। নাভিশ্বাস তোলা গরমেও একরুমে গাদাগাদি করে থাকছেন ২০-২৫জন।দীর্ঘ ২৮বছর পর কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু প্রতিষ্ঠা হলেও হলগুলোতে এখনো কাটেনি সংকট।
হলের মেঝেতে নির্ঘুম রাত, বৃষ্টি যেখানে আশির্বাদ নয় আসে কাল হয়ে। গণরুমের সেসব শিক্ষার্থীরা সকল কষ্টকে ভুলে একটু শীতলতার পরশ পেতে মিলিত হয় ভিন্ন আয়োজনে।