১৭ জানুয়ারি আজ। ২০১৪ সালের এদিন বাংলা সিনেমার মহানায়িকা সুচিত্রা সেন সবাইকে শোক সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। সুচিত্রা সেন নামটির সঙ্গে পরিচিত নন এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। লাখো তরুণের সেই স্বপ্নরাণীর প্রয়াণ দিবস আজ।
প্রিয় এই অভিনেত্রীর মৃত্যু সংবাদ সেদিন অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। বলেছিলেন সুচিত্রা মরেণনি, বেঁচে আছেন। অবসান ঘটেনি বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগেরও। কিংবদন্তি এই অভিনেত্রীর মৃত্যু বিশ্বমিডিয়াকে তুমুলভাবে নাড়া দেয়।
তার স্মৃতি রোমন্থন করে চলে নানা আয়োজন। বুকে হাত রেখে বলুন তো এই প্রিয়দর্শিনীকে আপনি এক মুহূর্তের জন্যও ভালবাসেননি। কি পারলেন না তো?
এই কাজটি পারেনি কিংবা এখনও পারছেন না অভিনয় জগতের মানুষেরাও। তারা মনে করেন সেলুলয়েডের সাম্প্রতিক পর্দায় তার উপস্থিতি না থাকলেও তিনি আছেন প্রতিটি ফ্রেমে, হাসি-কান্না-খুনসুটির নস্টালজিয়ায়।
মৃত্যুর আগে দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন চলচ্চিত্রে ইতিহাস সৃষ্টি করে যাওয়া এই চিত্রনায়িকা। হয়তো সেটা নিদারুণ অভিমানেই। দিনটি ছিল ২৪ জুলাই, ১৯৮০। এদিন পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়েছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। অনেকটা সেদিনই যেন বিদায় নিলেন সুচিত্রাও।
উত্তমের শেষ শয্যার পাশ থেকে উঠে ফিরে গেলেন কলকাতার বালিগঞ্জের ২৪/৪/৪ ঠিকানায়। সেই যে গেলেন, তারপর ফিরলেন এক-দু’বার। ১৯৮২ সালের কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এবং ১৯৮৯-এ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভরত মহারাজের মৃত্যুর পর সর্বশেষ তাকে জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল।
১৯৩১ সালে পাবনা শহরের দিলানপুর মহল্লায় হেমসাগর লেনে অবস্থিত বাড়িতে সুচিত্রা সেনের জন্ম। তার ডাক নাম রমা। পাবনার মহাখালি পাঠশালায় প্রাইমারি পাঠ চুকিয়ে তিনি ভর্তি হন পাবনা গার্লস স্কুলে। এখানে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন তিনি।
এরপর ১৯৪৭ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসে স্বামীর হাত ধরে কলকাতায় চলে যান। ১৯৬০ সালে তার বাবাও তাদের বসতভিটাটি জেলা প্রশাসনের কাছে ভাড়া দিয়ে সপরিবারে কলকাতায় পাড়ি জমান।
সুচিত্রা সেনের অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই চলচ্চিত্রে ঝুঁকেছেন। তার বাচনভঙ্গি-অভিনয়শৈলিতা অনুকরণ-অনুসরণ করে ‘নায়িকা’ তকমা লাগানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তা কি আর হয়? সবাই কি সুচিত্রা হতে পারে?
তিনি একজনই, অদ্বিতীয়া। শুধু জন্ম কিংবা মৃত্যু দিবস নয়, মহানায়িকা সুচিত্রা আছেন বছরের ৩৬৫ দিনই। তিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন কোটি বাঙালির মানসপটে।