আতিকুর রহমান তিতাস:
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে প্রতিদিনের মতোই শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন রানা প্লাজার পোশাক তৈরি কারখানায়। কারখানার কাজ চলাকালীন সকাল ৯টার দিকে ধসে পড়ে আট তলা ভবনটি।
কিছু বুঝে উঠার আগেই ভবনের নিচে চাপা পড়েন সাড়ে পাঁচ হাজার পোশাক শ্রমিক। এ ঘটনায় ১ হাজার ১৩৮ জনের লাশ পাওয়া গেলেও নিখোঁজ ছিলেন অনেকে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে দেওয়া তালিকায় নিখোঁজের সংখ্যা বলা ছিল ৩৭৯ জন।
এর মধ্যে প্রথম দফায় ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পাওয়া যায় ১৫৭ জনের খোঁজ। দ্বিতীয় দফায় পরিচয় মেলে আরও ৪২ শ্রমিকের। ১৩ মে পর্যন্ত চলা উদ্ধার অভিযানে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল ২৫১৫জনকে।
সাভারের রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়ম না থাকা সত্তে¡ও সাভারের রানা প্লাজার তৃতীয় ও অষ্টম তলায় জেনারেটর রুম রাখা হয় যা এত বড় দুর্ঘটনার ক্ষেত্র তৈরি করে।
এদিকে, রানা প্লাজা ধসে আহত শ্রমিকদের জীবনে আজও হাসি ফোটেনি। সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগের পরও ওই মৃত্যুকূপ থেকে ফিরে আসা আহত শ্রমিকদের মন থেকে এখনও কাটেনি ভয় আর শঙ্কা।
ভয়াবহ এ ট্রাজেডির ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনে দায়েরকৃত দুই মামলার কোনো কূল-কিনারা হয়নি। প্রায় তিন বছর আগে এ দুই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। পরে এ বিষয়ে বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যান কয়েকজন আসামি। বৈধতা চ্যালেঞ্জের আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়ায় আটকে আছে মামলা দু’টির সাক্ষ্যগ্রহণ।
রানা প্লাজা ধসের হত্যা মামলায় ৪১ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন ভবনের মালিক সোহেল রানা। জামিনে আছেন ৩২ আসামি। পলাতক আছেন ছয়জন। মারা গেছেন দুই আসামি।
সাভার এলাকায় একসঙ্গে এতো শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ব-ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ শিল্প-দুর্ঘটনা