রিকশা নয়, রাজধানীতে অস্বাভাবিক যানজটের মূল কারণ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ব্যক্তিগত গাড়ি। রিকশাচালকদের ওপর আইন প্রয়োগ করা হলেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত গাড়ি পার পেয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীতে ন্যায়ভিত্তিক যাতায়াত ব্যবস্থা শীর্ষক আলোচনায় উঠে আসে এসব তথ্য। যানজট নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহনের মানোন্নয়ন করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।একই সড়ক। লেন না মেনে ইচ্ছামতো চলছে বাস, প্রাইভেট কার, অটোরিকশা, রিকশাসহ সব ধরনের গাড়ি। তীব্র যানজটে ফিটনেসবিহীন গাড়িতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে নাজেহাল যাত্রীরা। এমন চিত্র রাজধানীর চিরচেনা।রাজধানীতে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আলোচনা সভা হয় প্রেস ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের অডিটোরিয়ামে। বক্তারা বলেন, মেট্রোরেলের মতো আধুনিক যাতায়াত ব্যবস্থা তৈরি হলেও বেশি খরচের কারণে নিম্নবিত্ত সেটি ব্যবহার করে কম।
নগর পরিকল্পনাবিদ রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘পরিবহনকে কীভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে অ্যাক্সেসেবল করা যায়, বা আর কি কি ব্যবস্থা করা যায়, যার মাধ্যমে মবিলিটি বা অ্যাকসেস বাড়ানো যায় এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। এ ছাড়া এগুলো পাবলিক গুডস তৈরিতে আমাদের একটু ভাবার সুযোগ করে দেবে।’ ফিটনেসহীন গণপরিবহন নিরাপদ না হওয়ায় মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ির দিকে বেশি ঝুঁকছে। অসুস্থ রোগীদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই বাসগুলোতে। অন্যান্য দেশে স্কুল বাসের ব্যবস্থা থাকলেও ঢাকায় শুধু শিশুর জন্যই ব্যবহার হয় একটি গাড়ি।নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘যারা হুইল চেয়ার নিয়ে চলে তার পক্ষে কি ঢাকা শহরে বাসে ওঠা সম্ভব! তাহলে আপনি জাস্টিস কোথায় পাচ্ছেন! জাস্টিস তো নাই। আমাদের ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষ হেঁটে চলে।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, শুধু রিকশা নয়, সব ধরনের গাড়ির জন্য আইনের সমান প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ধনী ও ক্ষমতাসীনরা শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘সবচেয়ে স্বেচ্ছাচারী ব্যবহারটা যারা করে, তাদেরকে আরও বেশি স্বেচ্ছাচারী হওয়ার জন্য, যারা এইখানে জীবিকার জন্য কাজ করে, পরিবেশের ক্ষতি না করে কাজ করে, তাদের মনে করা হয় বা চিহ্নিত করা হয় এটার জন্য সবচেয়ে দায়ী। এবং তাদেরকে ধাপে ধাপে এই রাস্তা থেকে তুলে দিতে হবে, ওই রাস্তা থেকে তুলে দিতে হবে- এই কাজগুলো করা হয়।’এদিকে, দূষণ রোধ ও কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাইকেল ব্যবহারেও উৎসাহ দেওয়া হয়।