ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫ , ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
এ ওয়ান পলিমার ও আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ডিলার সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত পরোয়ানা জারি হওয়া সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের ক্ষমতা ট্রাইব্যুনালের রয়েছে নোবেল শান্তি পুরস্কারের তথ্য ফাঁসের সন্দেহ, তদন্তে কমিটি শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড-জলকামান মসজিদুল আকসার খতিবের ওপর ৬ মাসের নিষেধাজ্ঞা আরিয়ানের বিরুদ্ধে মামলা করায় বিপাকে সমীর ওয়াংখেড়ে শিশুদের ‘নোবেল’ পুরস্কারে মনোনীত কিশোরগঞ্জের মাহবুব ঢাকায় সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা, তাপমাত্রা থাকবে অপরিবর্তিত ত্রাণ বিতরণ সিম্বলিক, মূল উদ্দেশ্য ছিল অবরোধ ভাঙা : শহিদুল আলম জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান দুই দিন পেছাল ভারী অস্ত্র নিয়ে পাক সেনাদের ওপর আফগানিস্তানের হামলা, সীমান্তে সংঘর্ষ গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ইসরায়েল সালিশ মনঃপূত না হওয়ায় পিটিয়ে ব্যবসায়ীকে হত্যা নওগাঁয় গণপিটুনিতে ডাকাত নিহত আমি এ দোকানের ‘বান্ধা কাস্টমার’: মারজুক রাসেল নববধূর সাজে নজর কাড়লেন সেলেনা গোমেজ মক্কায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের যেভাবে আবদার মেটালেন মুশফিক রুক্মিণীকে বিয়ে করা নিয়ে যা বললেন দেব নারীদের জন্য তারেক রহমানের ৬ অঙ্গীকার কিছু চিহ্নিত ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের ওপর দেওয়া উচিত নয়: বিএনপি

ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন, বাড়বে খেলাপি ঋণ

  • আপলোড সময় : ২৯-১১-২০২৪ ০২:০৭:১১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৯-১১-২০২৪ ০২:০৭:১১ অপরাহ্ন
ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন, বাড়বে খেলাপি ঋণ
ঋণ শ্রেণিকরণের নতুন নিয়মে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশে গত ছয় মাসে বেসরকারি খাতে কোনো বিনিয়োগ নেই। আর্থিক খাতে এখনো চলছে অস্থিরতা। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নতুন প্রেসক্রিপশনে ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগ ব্যাহত হবে। কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়বে। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, নিয়মিত ও খেলাপি ঋণের বিপরীতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখার ফলে ব্যাংকের মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিনিয়োগ স্থবিরতায় মন্দার আশঙ্কা করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টাও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশ। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে মোট ১৬ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। এপ্রিল-জুন প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৩ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা, আর বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪৯ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে ঋণ পেতে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের শর্ত পূরণ করেছে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ঋণ শ্রেণিকরণ নীতিমালা সংশোধন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঋণ শ্রেণিকরণে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা মাস্টার সার্কুলার মোতাবেক সব ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধ/সমন্বয়ের জন্য নির্ধারিত দিনের পরবর্তী দিন থেকে তা মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য হবে। সব ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণের সময়সীমা ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে হলে নিম্নমান, ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে সন্দেহজনক ও ১২ মাস বা এর অধিক হলে মন্দ/ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত হবে। স্ট্যান্ডার্ড ঋণের ক্ষেত্রে ঋণস্থিতির ১ শতাংশ, স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ঋণস্থিতির ৫ শতাংশ জেনারেল প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। বিরূপমানে শ্রেণিকৃত ঋণের ক্ষেত্রে নিম্নমান হলে প্রভিশনের ভিত্তির ওপর ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক হলে প্রভিশনের ভিত্তির ওপর ৫০ শতাংশ ও মন্দ-ক্ষতিজনক হলে প্রভিশনের ভিত্তির ওপর ১০০ শতাংশ স্পেসিফিক প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। এ বিষয়ে ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, খেলাপি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নিয়ম বেসরকারি খাতবিরোধী পদক্ষেপ। এতে বিনিয়োগ ব্যাহত হবে। কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়বে। সব মিলিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব পড়বে। আইএমএফের কাছ থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার শর্ত হিসেবে অনেক নিয়মকানুন করতে হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, তখন বাস্তবতা লুকানো হতো। এখন তো অর্থনীতির ক্ষত বেরিয়ে আসছে। ফলে এখন এই সিদ্ধান্তের ফল ভালো হবে না বলেই মনে করছি।

বিজিএমইএর পরিচালক ও শাশা ডেনিমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোর দোষে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তা নয়; একদিকে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে, আরেক দিকে জ্বালানির দাম ও শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে। জ্বালানির দাম ও শ্রমিকদের মজুরি প্রায় একই সময় বেড়েছে। এর পর সামনে দুটি ঈদ। এপ্রিল মাস থেকে খেলাপি ঋণের নতুন এই নীতি কার্যকর হলে তৈরি পোশাক খাতে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে। সেটা হলে সামস্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও নষ্ট হবে। আশঙ্কা করছি, খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে যাবে। এই সিদ্ধান্ত সময়োচিত হলো না। সরকারের উচিত হবে, আইএমএফের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে, বিশৃঙ্খলার কারণে বেসরকারি খাতে উৎপাদনে স্থবিরতা দেখা যাচ্ছে। গার্মেন্ট খাতে স্থবিরতা আছে। তার ওপর সুদহার অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। সরকারি উন্নয়ন ব্যয়ও যদি না বাড়ে তাহলে তো অর্থনীতির মন্দা অবস্থা তৈরি হবে।’ ব্যাংকাররা বলছেন, ঋণ খেলাপির নতুন নীতিমালা ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল  থেকে কার্যকর হলে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে দ্বিগুণ হবে। ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, আগামীতে খেলাপি ঋণ বাড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। নিয়মিত এবং খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ বাড়বে। ফলে ব্যাংকের মুনাফা কমে যেতে পারে।  এ বিষয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অর্থনীতিতে গতিশীলতা ফিরে আসার পর এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে হয়তো ভালো হতো। ব্যাংক খাতকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করতে সহায়তা করলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ঋণ নতুন করে খেলাপি হয়ে যাওয়ার শঙ্কা বাড়বে। অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ব্যাংক খাতের জন্য বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কডিভের কারণে অর্থনীতির অবস্থা যখন খারাপ হলো, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক একটা সার্কুলার জারি করে জানিয়েছিল, নয় মাস ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলেও খেলাপি হবে না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য এ সময়সীমা ধীরে ধীরে কমিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে ৯০ দিনে নিয়ে এসেছে। কিন্তু অর্থনৈতিক অবস্থার তো উন্নতি হয়নি।  তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা আমাকে বলেন, আমরা কভিডের সময় ভালো ছিলাম। আমরা কভিডে ফিরে যেতে চাই। তার মানে কভিডের চেয়েও খারাপ অবস্থায় এখন আছি। গ্যাস-বিদ্যুতের কারণে কারখানা চালাতে পারছি না। শ্রমিক অসন্তোষ ছিল দুই মাস। আমি ব্যাংকের টাকা কোথা থেকে দেব? সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কোনো গ্রুপ অব কোম্পানির একটি প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে পুরো গ্রুপকে খেলাপি করা হচ্ছে।

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ
এ ওয়ান পলিমার ও আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ডিলার সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত

এ ওয়ান পলিমার ও আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ডিলার সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত