ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গোলান মালভূমির বাফার জোনে সাময়িক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ১৯৭৪ সালে সিরিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী, গোলান মালভূমিতে একটি বাফার জোন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে সংঘাতের প্রভাব এড়াতে দুটি দেশের বাহিনীর মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ছিল। কিন্তু সিরিয়ায় সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিপর্যয়কর হয়ে ওঠায়, ইসরায়েল বাফার জোন এবং আশপাশের কমান্ডিং অবস্থানগুলোতে নিজেদের সেনাবাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নেতানিয়াহু বলেন, “ইসরায়েল নিজের সীমান্তে শত্রু বাহিনীকে অবস্থান নিতে দেবে না,” এবং এ জন্য তিনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে (আইডিএফ) নির্দেশ দিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি যুদ্ধবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা জানায়, ৭ ডিসেম্বর সিরিয়ার সেনারা কুনেইত্রা প্রদেশে তাদের অবস্থান থেকে সরে যায়। কুনেইত্রা প্রদেশের কিছু অংশ বাফার জোনের ভেতরে রয়েছে।
এদিকে, সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধারা রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করে এবং প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য অবস্থান নেয়। ১৯৭১ সাল থেকে আসাদ পরিবার সিরিয়ার শাসন করছে। রোববার ভোরে ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল–শামের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা দামেস্কে প্রবেশ করে এবং রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সিরিয়ার মুক্তির ঘোষণা দেয়।
গোলান মালভূমি ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল দখল করে, এবং ১৯৮১ সালে এটিকে নিজেদের অংশ ঘোষণা করে। যদিও ইসরায়েলি পদক্ষেপ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়নি, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
নেতানিয়াহু আসাদ সরকারের পতনকে "মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহাসিক দিন" হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, "এটি একটি বড় সুযোগ সৃষ্টি করেছে, তবে এতে উল্লেখযোগ্য বিপদও রয়েছে," এবং এই পরিস্থিতির জন্য ইরান এবং লেবাননের হিজবুল্লাহকে দায়ী করেন।
নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইসরায়েল তার সৌহার্দ্যের হাত বাড়িয়ে দেবে সেই সব সিরীয় নাগরিকদের প্রতি, যারা ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে থাকতে চান। তিনি বলেছেন, বাফার জোনে ইসরায়েলি বাহিনীর অবস্থান একটি সাময়িক আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা, যা যথাযথ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বজায় থাকবে।