পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হয়েছে জুলাই বিপ্লবের ঘটনা। প্রচ্ছদে সংযোজন করা হয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি। একই সঙ্গে বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে মহান স্বাধীনতার পেছনে থাকা সব নায়কের অবদান। আগামীতে আরও বৃহৎ পরিসরে পরিমার্জনের মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তক ঢেলে সাজানোর কথা জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
জানা গেছে, এবার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রায় ৪০ কোটি ১৬ লাখ নতুন বই ছাপানো হচ্ছে। এতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। প্রতিটি বইতেই রয়েছে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে সংঘটিত জুলাই বিপ্লবের ছোঁয়া।
বাংলা বইয়ে “যত বিপদ তত ঐক্য” শিরোনামের গ্রাফিতি স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ের বইয়ে ১৯৫২ থেকে ২০২৪ সালের ইতিহাস সংশ্লিষ্ট গ্রাফিতিও যুক্ত হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বইয়ে জুলাই বিপ্লবের বীরত্বগাথা গল্প আকারে তুলে ধরা হয়েছে।
এনসিটিবি জানিয়েছে, ইতিহাস বিকৃতি রোধে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের গঠনে অবদান রাখা সব নায়কের ভূমিকা পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, তাজউদ্দীন আহমদ এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়গুলোও স্থান পেয়েছে নতুন পাঠ্যবইয়ে।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান ড. এ কে এম রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “যে গ্রাফিতিগুলো সার্বজনীন আবেদন তৈরি করে, সেগুলো বইয়ে রাখা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ইংরেজি বইয়ে 'গ্রাফিতি' নামে একটি আর্টিকেল এবং পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে 'আমরা তোমাদের ভুলবো না' শিরোনামের একটি লেখা রাখা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “২৬ ও ২৭ মার্চ শহীদ জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা এবং ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের জাতীয় গুরুত্বও পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেছেন, “জাতীয় দর্শন অনুযায়ী শিক্ষাক্রম তৈরি করতে হবে। গুণগত মানসম্পন্ন কাগজে বই ছাপানো হলে দীর্ঘদিন একই বই ব্যবহার করা যাবে, যা ব্যয় কমিয়ে আনবে।”
পাঠ্যপুস্তকে এসব পরিবর্তন নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে এবং জাতীয় চেতনা গড়ে তুলতে সহায়ক হবে বলে মনে করছে এনসিটিবি।