ঢাকা , বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ , ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বেলারুশ থেকে উড়ে আসছে বেলুন, লিথুয়ানিয়ায় জরুরি অবস্থা গৃহকর্মী গ্রেফতার, জানা গেল মা-মেয়েকে হত্যার কারণ ১২৫ আসনে এনসিপি প্রার্থীদের জেলাভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ তালিকা ভোট করবেন আসিফ, কূটনৈতিক পাসপোর্ট জমা; তবে পদত্যাগ কবে— উত্তর দেননি ১০ কোটি ডলারের সরকারি বাড়িতে উঠছেন জোহরান মামদানি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিইসির বৈঠক আজ, যেকোনো মুহূর্তে তফসিল আমরা দুর্নীতি করব না, করতেও দেব না: ডা. শফিকুর রহমান ব্রাজিলে লাইব্রেরিতে দিনের বেলায় চুরি, উধাও ডজনখানেক আর্টওয়ার্ক জামায়াতের মিষ্টি কথার আড়ালে কী আছে, আল্লাহ জানে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেল টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প খালেদা জিয়াকে সেনাকুঞ্জে যেতে নিষেধ করেছিলেন চিকিৎসকরা: তারেক রহমান মস্কোর কাছে বিধ্বস্ত রুশ সামরিক কার্গো বিমান, নিহত ৭ পদত্যাগ করছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সালমান শাহ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১৩ জানুয়ারি দুধ দিয়ে গোসল করার উপকারীতা কেজিতে ৪০ টাকা কমলো পেঁয়াজের দাম মানুষের জীবনে বিয়ে কেন প্রয়োজন আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া, আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচন দেওয়ার শর্ত ছিল না- উপদেষ্টা সাখাওয়াত মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

ডেঙ্গুর ধরন ‘ডেন-২’ দুই বছর স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

  • আপলোড সময় : ২৭-১০-২০২৪ ১২:৩৮:০১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-১০-২০২৪ ১২:৩৮:০১ অপরাহ্ন
ডেঙ্গুর ধরন ‘ডেন-২’ দুই বছর স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
গতবছর ডেঙ্গুতে দেশজুড়ে ছিল ভয়াবহ পরিস্থিতি, যার প্রভাব এ বছরেও রয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর মৃত্যু কম হলেও মৃত্যুর হার কাছাকাছি।চলতি বছর রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীদের ৮৫ শতাংশেরও বেশি ডেঙ্গু ভাইরাস সেরোটাইপ–২ (ডেন–২) দ্বারা আক্রান্ত বলে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এর সম্প্রতি ডেঙ্গুর ধরন নিয়ে পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে।আর এই সেরোটাইপটি আগামী দুই বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যখাতের বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, বাকি রোগীদের অধিকাংশ ‘ডেন-৩’ এবং কিছু রোগী ডেঙ্গুর ‘ডেন-১’ ধরনে আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া, চট্টগ্রামে ‘ডেন-২’ ধরনে আক্রান্তের হার প্রায় ৯০ শতাংশ।২০২৩ সাল থেকেই ডেঙ্গুর প্রভাবশালী সেরোটাইপ ‘ডেন-২’ এর ব্যাপক বিস্তার চলমান এই সংকটের মূল কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এবারে যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এক্ষেত্রে একটু বয়স্ক এবং নারীরা বেশি মারা যাচ্ছেন। যারা হৃদরোগ, কিডনি, ডায়বেটিসসহ অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত– তারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে মৃত্যু বেশি হচ্ছে।

আইসিডিডিআর,বি– এর সংক্রামক রোগ বিভাগের বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ডেঙ্গুর একটি ধরন নতুন করে এলে তখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেড়ে যায়। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ছিল ডেন-৩। এরপর ২০২৩ থেকে ডেন-২ ফের আসে; ফলে গতবছর আমরা ডেঙ্গুতে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হই।’তিনি বলেন, ‘এর মূল কারণ হচ্ছে একই ব্যক্তি যখন ভিন্ন সেরোটাইপে আক্রান্ত হন, তখন তার মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়।’ এই গবেষক আরও বলেন, ‘ডেঙ্গুর চারটি ধরন (ডেন-১ থেকে ডেন-৪) এর মধ্যে এখন দেশে ডেন-২ এবং ডেন-৩ বেশি দেখা যাচ্ছে। অল্প কিছু রোগী ডেন-১ এর আক্রান্ত। এবার ৮৫% এরও বেশি রোগী ডেন-২ তে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গুর চারটি ধরনের একটিতে পজিটিভ হলে পরবর্তীতে ওই ধরনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা তেমন থাকে না। তবে দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে রোগীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হতে পারে।’তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গুতে অধিকাংশ রোগীর মৃত্যু হচ্ছে অবহেলার কারণে। ৮০ শতাংশ মানুষ বুঝতেই পারেন না যে তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আবার অনেক সময় ডেঙ্গু টেস্ট করলেও ধরা পড়ছে না। ডেঙ্গুর আইজিএম টেস্ট করালে ধরা পড়ছে। তাই অনেকেই চিকিৎসা নিতে অবহেলা করার কারণে শক সিন্ড্রমে মারা যাচ্ছেন।’

‘এবারে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত নারীদের সংখ্যা পুরুষের চেয়ে কম হলেও মৃত্যুতে হার অনেক বেশি। এর অন্যতম কারণ শারীরিকভাবে যারা একটু দুর্বল, তারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।’বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘সাধারণত ডেঙ্গুর একটি সেরোটাইপের প্রাধান্য থাকে তিন থেকে চার বছর। এ সময় বড় একটি সংখ্যক মানুষ এই সেরোটাইপে আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের মধ্যে ইমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (প্রতিরোধ ক্ষমতা) হয়। গত বছরও সেরোপটাইপ-২ এর প্রাধান্য দেখা গেছে। যেহেতু এবার সেরোটাইপ (ডেন-২) রয়েছে, সুতরাং আগের সেরোটাইপটির জন্য মানুষের মধ্যে ইমিউনিটি তৈরি হয়ে আছে।’বিভিন্ন হাসপাতালের তথ্য বলছে, শক সিনড্রোম ও হেমোরজিক ফিবার দুই ধরনের সমস্যা নিয়ে এবারে রোগীরা আসছেন। গত বছর শক সিনড্রোমের রোগী আরও বেশি ছিলেন। কারও মধ্যে শক সিনড্রোম বা হেমোরজিকের উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।অক্টোবরের ২৬ দিনে ডেঙ্গুতে ১০৮ জন মারা গেছেন। এই মাসেই চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ২৭১-এ পৌঁছেছে, যা ২০০০ সালের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে তৃতীয়-সর্বোচ্চ এবং সম্ভাব্য দ্বিতীয়-সর্বোচ্চকে শিগগিরই ছাড়িয়ে যেতে পারে। নারীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার দাঁড়িয়েছে ৩৬.৭ শতাংশে, পুরুষের হার ৬৩.৩ শতাংশ। তবে নারীদের হাসপাতালে ভর্তির হার কম হওয়া হলেও তাদের মৃত্যুহার  ৫৩.৫ শতাংশ।জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মুশতাক হোসাইন বলেন, ‘দেশে চিকিৎসাব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ না হলে ডেঙ্গুতে মৃত্যু কমানো সম্ভব না। বর্তমান চিকিৎসাব্যবস্থা ও পদ্ধতির পরিবর্তন করা জরুরি। কোনো ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত হলেই যেন তিনি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে পারেন যে, তার ডেঙ্গু হয়েছে কি না। এজন্য কমিউনিটি ক্লিনিকসহ পরীক্ষা ব্যবস্থা মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে যেতে হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গুতে কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত হতেই পারেন, কিন্তু এটিতে মৃত্যু হওয়ার মতো পরিস্থিতি কেন তৈরি হবে? বর্তমান সরকার ডেঙ্গু রোগী খুঁজতে কিংবা মশার ঘনত্বপূর্ণ এলাকা খুঁজতে শিক্ষার্থীদের কাজে লাগাতে পারে। আমাদের দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের বৃত্তের বাইরে এসে কাজ করতে হবে। এজন্য দরকার উদ্যোগ। দেশ রক্ষায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ যেমন রাস্তায় নেমে এসেছিলো, সকল পাবলিক হেলথের বিষয়েও উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয় লোকজনকে সম্পৃক্ত করলে তারাও উদ্যোগী হবে কাজে।’‘সরকার যদি ডেঙ্গুর চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ পর্যায়— এই তিন ভাগে ভাগ করে চিকিৎসা দেয়, তাহলে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা ও মৃত্যুহার কমানো সহজ হবে।’

একইসঙ্গে গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা সুবিধা উন্নতি করাসহ সিটি করপোরেশন ও রেলওয়ে হাসপাতালগুলো ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় ১.১৯ লাখ মানুষ। ওই বছর মারা যায় ১৭৯ জন। এই রোগীদের মোটামুটি সবাই ডেঙ্গুর নতুন ধরন ‘ডেন-৩’ আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছায় ১,৭০৫ জনে, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

সূত্র : টিবিএস

 

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
বেলারুশ থেকে উড়ে আসছে বেলুন, লিথুয়ানিয়ায় জরুরি অবস্থা

বেলারুশ থেকে উড়ে আসছে বেলুন, লিথুয়ানিয়ায় জরুরি অবস্থা