বাংলাদেশের ব্যাটাররা তাকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন কি না, জানা যায়নি। তবে তাইজুল নিজ দলের ব্যাটারদের কাছ থেকে বিশেষ ধন্যবাদের আশা করতেই পারেন। কারণ, দিন শেষে তাইজুলই রক্ষাকর্তা। তার ঘূর্ণি বলেই আপাততঃ মুখ রক্ষা।
না হয় সাদমান, মুমিনুল, অধিনায়ক শান্ত, মুশফিক, লিটন, মিরাজ, জাকের আলী অনিক আর মাহমুদুল হাসান জয়রা যে যাচ্ছেতাই মার্কা শ্রী-হীন ব্যাটিং করেছেন, তাতে করে প্রথম দিন শেষে তাদের ওপরই সব দায় দায়িত্ব অর্পিত হতো। ব্যর্থতার ঘানি টেনে ব্যাটাররা খলনায়ক বনে যেতেন এবং তাদের ব্যর্থতার বৃত্ত ভেদ করে বেরিয়ে আসতে না পারায় আজ সোমবার প্রথম দিনই একদম ব্যাকফুটে চলে যেতে পারতো।
সেখান থেকে তাইজুল তাদের আপাততঃ রক্ষা করেছেন। নিজ ক্যারিশমা, দক্ষতা, উইকেট শিকারের তীব্র ক্ষুদা এবং ২০০ উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করে ব্যাটারদের অনুজ্জ্বলতা ঢেকে দিয়ে প্রথম দিনটাকে তার নিজের করে রাখলেন।
শুধু দক্ষতা, অর্জন আর কৃতিত্ব দিয়েই নয়, প্রথম দিন চা বিরতির আগে মাত্র ১০৬ রানে প্রথম ইনিংস শেষ করে খাদের কিনারায় পড়ে যাওয়ার পরও দলকে টেনে তুলেছেন তাইজুল। এ বাঁ-হাতি স্পিনারের স্পিন ঘূর্নিতে আউট হয়েছেন ৫ প্রোটিয়া ব্যাটার। সে কারণেই দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের চেয়ে খুব বেশি লিড নিতে পারেনি। ৩৪ রানে এগিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে মারক্রাম বাহিনী।
সাকিব আল হাসান নেই। তার অনুপস্থিতিতে কিভাবে পরিবেশ-পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়ে নিজেকে মেলে ধরলেন, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টেস্টে ২০০ উইকেট পেলেন এবং সাকিবের চেয়েও ৬ টেস্ট কম খেলে ২০০ উইকেট পূরণ করলেন?
এসব প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তাইজুল বলে ওঠেন, ‘প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে আপনার, সাকিব ভাই নাই তাই তো। সাকিব ভাই নাই, সাকিব ভাই ছাড়া যে আমি খেলি নাই, তা তো না। অনেক ম্যাচ সাকিব ভাই ছাড়া খেলেছি। আমরা নিউজিল্যান্ডে টেস্টে জিতেছি, সেখানেও সাকিব ভাই ছিলেন না। আমরা যখন ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে এখানে ম্যাচ জিতেছি, তখনও সাকিব ভাই ছিলেন না। এরকম অনেক উদাহরণ আছে। আসলে আপনি তো একটা খেলোয়াড়কে ৫০ বছর খেলাতে পারবেন না।’
সাকিবকে মিস করেছেন কি না, জানতে চাইলে তাইজুলের জবাব, ‘আসলে কখনো একজন আসবে, আর একজন যাবে। ১০ বছর, ১৫ বছর, খুব বেশি হলে ২০ বছর; এটা আমাদের মেনে নিতেই হবে। আসলে কোনো সন্দেহ নেই, উনি অনেক ভালো খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু আমরাও দোয়া করবো, আপনারাও দোয়া করবেন উনার মতো যেন আরকে জন আসে বা এখন যারা আছে তারাও যেন ভালো পারফরম্যান্স করে,সাকিবের ছায়ায় থেকে থেকে তার আর সেভাবে তারকা হয়ে ওঠা হয়নি। এ নিয়ে কোন আক্ষেপ আছে কিনা, জানতে চাইলে তাইজুল বলেন, ‘আসলে আমাদরে দেশে সত্যি কথা বলতে কি, অনেক কিছুই মুখে মুখে হয় আরকি। মুখে মুখে বিষয়টা হলো, অনেকে আছে খারাপ করেও অনেক সময় আছে ট্রল হতে হতে তারকা হয়ে গেছে। আবার অনেকে ভালো করে তারকা হতে পারেনি। এমন অনেকে হয়েছে। আমি এটা মেনে নিয়েছি। মেনে না নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নাই।
mytvonline