বার্সেলোনা মানেই ফুটবল। বার্সেলোনা মানেই লিওনেল মেসি। যে দেশটির সিংহভাগ বাসিন্দা ক্রিকেটের নামই হয়তো জানে না। সেই বার্সেলোনায় এবার হতে যাচ্ছে ক্রিকেট স্টেডিয়াম! ভারতীয় আর পাকিস্তানের কয়েকজন তরুণী ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনার পেছনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন।
সম্প্রতি বার্সেলোনার ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নতির জন্য স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। এর জন্য বাজেট হয় ৩০ মিলিয়ন ইউরো। বাসিন্দাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কোন খেলার জন্য স্টেডিয়াম নির্মাণ করা উচিত। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ৮২২টি প্রকল্পের মধ্যে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রকল্পকে বেছে নিয়েছেন বার্সার জনগন! এর পেছনে আছে এশিয়ান তরুণীদের প্রচেষ্টা। ২০ বছর বয়সী পাকিস্তানি তরুণী হিফসা বাট শুনিয়েছেন বার্সেলোনায় ক্রিকেট স্টেডিয়াম প্রকল্পের গল্প।
কীভাবে এ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখল, সেটির পেছনের গল্প জানিয়েছেন সেখানে নিয়মিত ক্রিকেট খেলতে থাকা ভারতীয় ও পাকিস্তানি তরুণীদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ, ২০ বছরের হিফসা বাট।
হিফসা যখন মাধ্যমিকের ছাত্রী, তাঁদের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক স্কুলের সময়ের পর ক্রিকেট খেলার প্রস্তাব দেন। এরপর হিফসার বাবা সবাইকে ক্রিকেট খেলার খুঁটিনাটি ধরিয়ে দেন।
‘তিন বছর আগে মাধ্যমিক স্কুলে সবকিছু শুরু হয়েছিল, যখন আমাদের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক এসে বললেন, ‘‘আমরা এখন থেকে স্কুলের সময়ের পর খেলার জন্য একটা ক্রিকেট ক্লাব করব। কে কে যোগ দিতে চাও?’’…আমার বাবা আমাদের কীভাবে খেলতে হয়, সেটা দেখিয়ে দিয়েছেন, এরপর আমরা নিজেরা নিজেরা খেলতে শুরু করলাম।’
স্কুলের তরুণীদের খেলাটা পছন্দ হয়ে গেল। এরপর নিজেরাই ইনডোর ক্রিকেট লিগ আয়োজন করতে শুরু করলেন। এমন সময় মাঠের প্রয়োজন হয়ে পড়ল। হিফসা বলেন, ‘আমরা পাকিস্তান ও ভারতের মেয়ে, যে দেশগুলো ক্রিকেট কী, সেটা জানে। আমরা এখন স্পেনে এ খেলার খবর ছড়িয়ে দিতে চাই। কিন্তু টেনিস বলে খেলা আর ঘরের মাঝে টুর্নামেন্ট আর চলছিল না।’ ইতোমধ্যেই কাতালুনিয়ায় ২০টি ক্রিকেট ক্লাব হয়ে গেছে! এই ক্লাবগুলোতে প্রায় ৭০০ ক্রিকেটার আছেন। তাই ক্রিকেট মাঠের দাবি যৌক্তিক হয়ে গেল।
বর্তমানে ক্রিকেট মাঠের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। কাজটা সহজ নয়। কারণ বার্সেলোনার পাহাড়ী মাটিতে সমতল ক্রিকেট মাঠ বানানো কঠিন। বার্সেলোনা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট ক্লাবের অস্ট্রেলিয়ান সভাপতি ড্যামিয়েন ম্যাকমিউলেন বলেন, ‘সমতল এবং ১৬০০ বর্গমিটার স্পেসের এমন একটা জায়গা খুঁজে বের করা বার্সেলোনায় প্রায় অসম্ভব।’ তবে সমস্যা সমাধানে আপাতত মন্তিউর ছোট পাহাড়ের ওপরের সমতল চূড়াতে অ্যাস্ট্রোটার্ফ ক্রিকেট পিচসহ মাঠ বানানো হবে। এতে খরচ প্রায় ১.২ মিলিয়ন বা ১২ লাখ ইউরো।