ভারত সরকারের নতুন সোশ্যাল মিডিয়া নীতিকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। তাদের দাবি, নতুন এই নিয়মের আওতায় পড়লে গ্রাহকদের গোপনীয়তার সুরক্ষা ভেঙে ফেলতে হবে। এতেই আপত্তি জানাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ।
ভারত সরকারের নতুন সোশ্যাল মিডিয়া নীতির একটি শর্তে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে মেসেজের উত্স ট্র্যাক করতে হবে মেসেজিং প্ল্যাটফর্মকে। হোয়াটসঅ্যাপের দাবি, এই নীতি মানতে হলে প্রতিটি মেসেজের ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট রাখতে হবে। ফলে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন বলে আর কিছু থাকবে না।
হোয়াটসঅ্যাপের দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, নতুন আইন ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত গোপনীয়তার অধিকারের পরিপন্থী। এর ফলে ভারতে হোয়াটসঅ্যাপের ৪০ কোটি ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার লঙ্ঘন হবে। সে সঙ্গে তাদের নিরাপত্তাও বিঘ্ন হবে।
ভারতের সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী জীবনের অধিকারের মতোই নিজের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখাও একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে। নয়া সোশ্যাল মিডিয়া চ্যাট ট্রেস করার নীতিকে ভারতীয় সংবিধানের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার মৌলিক অধিকারের বিরোধী হিসেবে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমের ‘অপপ্রয়োগ’ ঠেকাতে বেশ কিছু শর্ত পূরণের নির্দেশনা দিয়ে ২৫ মে পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে সময় বেঁধে দিয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামসহ অন্য কোম্পানিগুলো তা পূরণ করেনি। তবে মঙ্গলবার ফেসবুক জানিয়েছে, ভারত সরকারের নিয়ম অনুসরণ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা। কিন্তু ফেসবুকেরই মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ নতুন এ আইনের বিরোধিতা করে আইনি পথে হাঁটল। ডিজিটাল অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো হোয়াটসঅ্যাপের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ মামলার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরোধের মাত্রা আরও বাড়ল। এ সপ্তাহের শুরুতে টুইটার কার্যালয়ে পুলিশের অভিযানের পর থেকে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে।