তীব্র তাপদাহে অতিষ্ট কানাডার জনজীবন। কানাডার ইতিহাসে টানা তৃতীয় দিনের মত সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার লিটন গ্রামে। মঙ্গলবার ওই এলাকায় তাপমাত্রা ছিল ৪৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২১ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।
এর আগে কখনোই কানাডার কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেনি।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার চিফ করোনার লিসা লাপোইন্তে এক বিবৃতিতে বলেছেন, গত সপ্তাহের শেষ থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছিল। চলতি সপ্তাহে তা রেকর্ড ভাঙছে। গত শুক্রবারের পর থেকে রাজ্যে ২৩০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। তাঁদের মৃত্যুর পেছনে তীব্র দাবদাহ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
দাবদাহে মৃত্যুর ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি)। এতে বলা হয়েছে, তীব্র গরমে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার জনবহুল শহর ভ্যাঙ্কুভার এবং পাশের বার্নাবি ও সুরে শহরে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটেছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই বয়স্ক। আরসিএমপির করপোরাল মাইকেল কালাঞ্জ বলেন, মৃত্যুর এসব ঘটনায় তদন্ত করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে তাঁরা মারা গেছেন। তীব্র গরমে বয়স্ক মানুষ ও শিশুরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া রাজ্যের একটি গ্রাম লুটন। গতকাল সেখানকার মানুষ বৈরী আবহাওয়ার চরম রূপ দেখেছে। দেশটির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এদিন বিকেলে লুটনে তাপমাত্রা উঠেছিল ১২১ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কানাডার ইতিহাসে এটাই সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। চলতি সপ্তাহের আগে কানাডায় তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়নি। তিন দিন ধরেই লুটনে রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রা বজায় রয়েছে।
কানাডার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ‘এনভায়রনমেন্ট কানাডা’ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ও অ্যালবার্টা প্রদেশ এবং সাসকাচুয়ান, নর্থওয়েস্টার্ন টেরিটোরিস এবং ইউকন প্রদেশের কিছু এলাকায় অতিরিক্ত তাপমাত্রার জন্য সতর্কতা জারি করেছে।
এনভায়রনমেন্ট কানাডার সিনিয়র জলবায়ুবিদ ডেভিড ফিলিপস বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শীতপ্রবণ দেশ এবং বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বরফ পড়ে, এমন একটি দেশ। এখানে মাঝেমধ্যে শৈত্যপ্রবাহ বা তুষার ঝড় হয়ে থাকে, কিন্তু এরকম উষ্ণ তাপমাত্রা এখানে প্রায় কখনোই পাওয়া যায় না। দুবাইয়ের তাপমাত্রাও আমাদের কয়েকটি এলাকার চেয়ে কম উষ্ণ।’
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, ১৯৪০ এর দশক থেকে আবহাওয়ার রেকর্ড সংরক্ষণ শুরু করার পর থেকে এবারই পোর্টল্যান্ড, ওরেগন, সিয়াটল ও ওয়াশিংটনে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।