বিদেশ যেতে অপেক্ষমাণ প্রবাসীদের টিকার জন্য শুক্রবার থেকে দেশের ৫৩টি কেন্দ্রে শুরু হয়েছে নিবন্ধন কার্যক্রম। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মঙ্গলবার থেকে টিকা দেওয়া শুরু হবে।
এ নিয়ে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
কোন প্রক্রিয়ায় বিদেশগামীরা করোনাভাইরাসের টিকা পাবেন, তার একটি রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে সরকার। তথ্য মতে, সরাসরি সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করা যাবে না এবং দুই দফা নিবন্ধন করতে হবে তাঁদের। প্রথমে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) অ্যাপে কিংবা সরাসরি বিএমইটির ৫৩টি কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।
বিএমইটির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের ৪২টি জেলায় বিএমইটি’র কার্যালয়ে প্রবাসী কর্মীরা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সরাসরি গিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। এছাড়া সারা দেশে বিএমইটির যে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো রয়েছে তার মধ্যে ৯টি এবং নারায়ণগঞ্জের ইনস্টিটিউট অফ মেরিন টেকনোলজিতে গেলেও নিবন্ধন করা যাবে। নয়টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, লক্ষ্মীপুর, মাদারীপুর, মেহেরপুর, শরীয়তপুর, সুনামগঞ্জ, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এবং লালমনিরহাটে অবস্থিত।
এছাড়া ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমেও নিবন্ধন করা যাবে। বিএমইটি থেকে দেওয়া স্মার্টকার্ড না থাকলেও যেকোনো শ্রমিক এই নিবন্ধন করতে পারবেন। সেজন্য পাসপোর্ট নম্বর প্রয়োজন হবে।
বিএমইটি থেকে এসংক্রান্ত উপাত্ত যাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। এর পরই সরকার নির্ধারিত প্ল্যাটফর্ম সুরক্ষায় সংরক্ষিত কোটায় টিকার নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন প্রবাসীরা। বিএমইটির নিবন্ধন করা থাকলে টিকার নিবন্ধনে বয়সের ক্ষেত্রে ৪০ বছর না হলেও প্রবাসী কর্মীরা টিকার জন্য নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।
সুরক্ষায় নিবন্ধনের পরে মোবাইল ফোনে মেসেজের মাধ্যমে টিকার কেন্দ্র ও তারিখ জানানো হবে। শুধু নিবন্ধন করেই কেন্দ্রে চলে গেলে হবে না। মোবাইল ফোনে মেসেজের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
বিদেশগামীদের টিকা নিতে দুই দফা নিবন্ধনের বিষয়টি স্পষ্ট করেন সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) পরিচালক এবং জাতীয় কভিড-১৯ ভ্যাকসিন পরিকল্পনার সদস্যসচিব ডা. শামসুল হক। তিনি বলেন, ‘বিএমইটি প্রবাসী কর্মীদের জন্য একটি অ্যাপ বানিয়েছে। অ্যাপের পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় বিএমইটির অফিস থেকে অভিবাসীরা নিবন্ধন করতে পারবেন। সেই তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এলে আমরা পরবর্তী যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করব। সপ্তাহের অন্য দিনের মতো শুক্রবার ও শনিবারও খোলা থাকছে বিএমইটির অফিস।’
তিনি জানান, এরই মধ্যে তাঁরা দুই লাখ অভিবাসীর তালিকা পেয়েছেন। রবিবারের মধ্যে সেই তালিকা যাচাই করা শেষ হবে। সোমবার রাত থেকে এসএমএস যাবে এবং মঙ্গলবার থেকে টিকা নিতে পারবেন বিদেশগামীরা। শুধু কুয়েত ও সৌদি আরবগামীদের ফাইজার, মডার্না, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার দরকার হবে। বাকিদের চীনের টিকা দিতে কোনো অসুবিধা নেই। সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
ডা. শামসুল হক আরও বলেন, টিকার জন্য আপাতত ঢাকার সাতটি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলো হল: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।