রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে আগামী দু–তিন দিনের মধ্যে করোনা পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে। বহুতল কার পার্কিংয়ের ওপর স্থায়ীভাবে করোনার পরীক্ষাগার বসাতে আরও ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগতে পারে। তবে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে কবে নাগাদ করোনার পরীক্ষা শুরু হবে, তা জানাতে পারেননি সরকারের দুই মন্ত্রী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
মঙ্গলবার সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শনে আসেন এই দুই মন্ত্রী। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ দুই মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বিমানবন্দরের পার্কিংয়ের জায়গা পরিদর্শন শেষে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। কবে নাগাদ বিমানবন্দরে করোনার পরীক্ষাগার বসবে, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরে পার্কিংয়ের ছাদ তৈরি করতে ১০ দিন লাগবে। ভেতরে যে জায়গা আছে, সেটা তৈরি আছে। দু–তিন দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। যারা কাজ করবে বলেছে, যদি এখন তারা বলে যন্ত্র নেই, আমদানি করতে হবে, তাহলে আমি বলব বাড়িতে যাও।’
ইমরান আহমদ আরও বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত চেয়েছে বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার বসাতে। আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করতে সময় বেশি লাগে। তবে র্যাপিড পিসিআর করতে সময় কম লাগে। এদিকে র্যাপিড পরীক্ষার যন্ত্র দেশে নেই।
১৫ সেপ্টেম্বর সাত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার বসাতে নির্বাচিত করে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) জমা দেয়। এসব এসওপি যাচাই করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠানো হয়েছে।
এসওপি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়টি সিভিল এভিয়েশনের কাজ, এটা প্রবাসী কল্যাণ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেখার বিষয় নয়। এটা তারা কোথায় পাঠিয়েছেন, কোথায় ক্লিয়ারেন্স পাবেন সেই ভিত্তিতে সিভিল এভিয়েশন কাজ করে যাবে। আগের সিদ্ধান্ত ছিল সাতটি প্রতিষ্ঠানকে পরীক্ষাগার করতে দেওয়া হবে। টেকনিক্যাল কমিটি সিলেকশন করেছে। এটা আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, এর পরে সেটি আমরা সিভিল এভিয়েশনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। আপাতত আরটি-পিসিআর ল্যাবের কাজ দিচ্ছি, পরে র্যাপিড পরীক্ষাও আমরা বিবেচনায় নিব। এটা কোথায় গিয়ে ঠেকবে আমি এখনও বলতে পারছি না।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘পরীক্ষার জন্য লাগবে পরীক্ষাগার, সেই পরীক্ষাগার বসাতে জায়গা লাগবে। দ্রুত এই কাজ শুরু করার জন্য বিমানবন্দরের ভিতরে একটি জায়গা দেওয়া হয়েছে। ৬টি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে, তারা আপাতত ছোট আকারে সেখানে পরীক্ষাগার বসাবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ কার্যক্রম শুরু করা হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরের বহুতল কার পার্কিংয়ের ছাদে স্টিলের কাঠামো করে পরে করোনার আরেকটি পরীক্ষাগার বসানো হবে। সেই জায়গা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হবে, পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকবে। এটা করতে হয় তো একটু সময় লাগবে। আমাদের যে কাজ ছিল, সেটি মন্ত্রণালয় থেকে করা হয়েছে। আমরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে দিয়ে দিয়েছি। আমরা যে কয়টি প্রতিষ্ঠান নাম প্রস্তাব করেছিলাম সে কয়টি তারা নির্বাচিত করেছেন।’
এসওপি সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পাঠানোর পর কোনো জবাব এসেছে কি না জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়গুলো আমরা দেখছি না, এটা বেবিচক দেখছে। যত দূর জানি, সে উত্তর তারা এখনো পায়নি।’
এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, করোনার পরীক্ষাগার স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে হয়েছে। এ কারণে নতুন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষকে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর আবার দিতে হবে কিনা আমি নিশ্চিত না। বিমানবন্দরের ভিতরে জায়গা ছোট। পরীক্ষাগার বসানো হলে আমরা বুঝতে পারবো কয়টা বুথ বসিয়ে কতজনকে একসঙ্গে পরীক্ষা করা যাবে।