করোনা মহামারিতে বেশিরভাগ দেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমেছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর কখনও প্রত্যাশিত আয়ু এক ধাক্কায় এতটা কমেনি।
সোমবার এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, চিলিসহ ২৯টি দেশের তথ্য নিয়ে এ গবেষণা করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে ২২টি দেশে গড় আয়ু কমেছে ছয় মাসের বেশি। এসব দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, চিলি ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ছিল। আর ২৯টি দেশের মধ্যে ২৭টি দেশেই মানুষের গড় আয়ু কমেছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, বিভিন্ন দেশে গড় আয়ু কমে যাওয়া করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।
করোনায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মহামারিবিষয়ক সাময়িকী ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব এপিডেমিওলজিতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনের সহ-লেখক ড. ঋধি কাশ্যপ বলেন, কোভিড–১৯ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কতটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে, গবেষণার ফলাফলে তা বোঝা যায়।
বেশির ভাগ দেশে নারীর তুলনায় পুরুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে পুরুষদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমেছে দুই বছরের বেশি।
১৫টি দেশে পুরুষের গড় আয়ু এক বছরের বেশি ও ১১টি দেশে নারীদের গড় আয়ু এক বছরের বেশি কমেছে। গত সাড়ে পাঁচ বছরে মৃত্যুহার কমানোয় যে সাফল্য অর্জিত হয়েছিল, করোনার কারণে তা থমকে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে কর্মজীবী এবং ৬০ বছরের নিচে যাঁদের বয়স, তাঁদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি। অন্যদিকে ইউরোপে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি।
কাশ্যপ আরও গবেষণার সুবিধার্থে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে মৃত্যুসংক্রান্ত পরিসংখ্যান জানানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী মহামারির ভয়াবহ প্রভাব আরও ভালোভাবে বুঝতে বিভিন্ন দেশকে মৃত্যুসংক্রান্ত আরও তথ্য প্রকাশের জন্য আহ্বান জানান কাশ্যপ।