পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ইতিহাস কিংবা অতীতের সাথে লড়াই করা সম্ভব না কিন্তু চাইলে নিজেই নিজের ভবিষ্যত তৈরি করা যায়। আর এই বিষয়টি তরুণদের হাতেই আছে। শুধু স্বপ্ন দেখেই নয়, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে হবে।
মন্ত্রী বলেন, কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি চিন্তা, গবেষণা, বাইরে যাওয়া, অ্যাডভেঞ্চার, ঝুঁকিগ্রহণ, স্টার্টআপ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও নিজেকে নিযুক্ত করতে হবে।
শুক্রবার আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি অডিটরিয়ামে আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা বেশিদিন মন্ত্রী থাকতে চাচ্ছি, বিষয়টা এমন না। সমাজের উন্নয়নের জন্য আমাদের স্থিতিশীল চিন্তা থাকতে হবে, এটাই হলো মূখ্য বিষয়। আমরা যদি স্থিতিশীলতার পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে না থাকি তবে আমাদের অবস্থা খারাপ হতে পারে, এমনকি পরাধীনতাও আসতে পারে। সেটা শারীরিকভাবে না হলেও অর্থনৈতিকভাবে কিংবা সামাজিকভাবেও হতে পারে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা বেশকিছু আইন চালু করেছি। অনেকেরই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন আছে যে, ব্যক্তিজীবনে হয়তো আঘাত আসতে পারে। কিন্তু সরকারের এ ধরনের কোনো ইচ্ছা নেই। আপনার সব ধরনের তথ্য জানার প্রয়োজন আছে। সে প্রয়োজন তো আমরাই নির্ধারণ করবো, আপনারা নয়। যারা অপরাধের মধ্যে আছে তাদেরকে আয়ত্তে আনতেই হবে। জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ও দেশের বিরুদ্ধে যারা কাজ করছে তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সরকার ওপেন পলিসিতে বিশ্বাস করে। প্রধানমন্ত্রী ঘরের ভেতরে নয়, উঠানে কাজ করায় বিশ্বাসী। যার ফলে তিনি কী করছেন না করছেন সব আমরা দেখতে পাই। আপনারা সরকারের সব ধরনের তথ্য আমাদের কাছে চাইতে পারেন, আমরা যদি না দিই, তাহলে আইনের মাধ্যমে আমাদের বাধ্য করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট আধুনিক একজন মানুষ। তিনি আরও আধুনিক হতে চান।
সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলসহ ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ এবং টেকনোহেভেন কম্পানি লিমিটেড যৌথভাবে এ আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম, হংকং ব্লকচেইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ড. লরেন্স মা, গ্লোবাল ব্লকচেইন বিজনেস কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক মিস. সান্দ্রা রো, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের বিশিষ্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক কনটেস্ট বাংলাদেশে আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত ও সত্যিই আনন্দিত। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পর্বে “ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২১”-এর বিজয়ী ১২টি দল এই আয়োজনের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশ নিচ্ছে যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। পলক বলেন, তরুণরাই ভবিষ্যতের অগ্রগতির মশাল বহণকারী। আমি বিশ্বাস করি, ২০২২ সালের আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে আরো বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী অংশ নিবেন।
অনুষ্ঠানে হংকং ব্লকচেইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ড. লরেন্স মা বলেন, এ বছর করোনা পরিস্থিতির জন্য এমন একটি আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজন করা অনেক কঠিন ছিল। বাংলাদেশ এত সুন্দরভাবে এই কাজটা সফলতার সাথে করতে পেরেছে যা সত্যিই প্রশংসনীয় বলে মনে করেন ড. লরেন্স মা। শেষে গ্লোবাল ব্লকচেইন বিজনেস কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক মিস. সান্দ্রা রো কী-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১” এর চেয়ারম্যান এবং টেকনোহেভেন কম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হাবিবুল্লাহ এন করিম।
৩ দিনব্যাপী এই অলিম্পিয়াড চলবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত। এ বছর অন্যান্য আয়োজনের পাশাপাশি মোট ৪টি সেমিনারের আয়োজন থাকছে। সেমিনারগুলি হবে সিবিডিসি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি, ই-গভর্নেন্স, আইডেন্টিটি অ্যান্ড প্রাইভেসি এবং ফিনটেক বিষয়ে।