দেশে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। রোববার রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসে (বিসিপিএস) করোনার বুস্টার ডোজ টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
দেশে প্রথম করোনা টিকা নিয়েছিলেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। তিনিই রোববার প্রথম বুস্টার ডোজ নিয়েছেন।
পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বুস্টার ডোজ নেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, টিকার জন্য যত টাকা লাগে সরকার দেবে। ষাটোর্ধ্বদের বুস্টার ডোজ দিতে যেসব প্রস্তুতি দরকার আমরা নিচ্ছি। প্রস্তুতি এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। সুরক্ষা অ্যাপ আপটেড করছি। আইসিটি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৮ ডিসেম্বরের আগে তারা আপডেট করা সম্ভব না। সুরক্ষা অ্যাপে এখন নিবন্ধন করা সম্ভব না হলেও বুস্টার ডোজের কার্যক্রম চলবে। কার্ডের মাধ্যমে টিকা নেওয়া যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেশ কয়েক ধরনের ভ্যাকসিন আমরা দিয়েছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রটোকল অনুযায়ী দিয়েছি। বুস্টার ডোজও আমরা ডব্লিউএইচওর প্রটোকল অনুযায়ী দেব। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ফাইজারের টিকা দেব। ডব্লিউএইচও বলেছে, যারা অন্য টিকা নিয়েছেন, তারাও বুস্টার হিসেবে ফাইজারের টিকা নিতে পারবেন। আমরা শুনেছি মডার্নাও বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া যায়। আমাদের স্টকেও মডার্না আছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, যারা করোনার টিকার দুই ডোজ নিয়েছে, তারা ধাপে ধাপে বুস্টার ডোজ পাবে। এ জন্য তাদের আর সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করার প্রয়োজন হবে না।
প্রথমে সম্মুখসারির ব্যক্তিদের (চিকিৎসক, নার্স, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, গণমাধ্যমকর্মী ও ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি) বুস্টার ডোজের আওতায় আনা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যরাও বুস্টার ডোজ পাবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের ৭০ ভাগ মানুষকে করোনার টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। এর অর্থ হলো ১২ কোটি মানুষকে টিকা দিতে হবে। এর জন্য ২৪ কোটি টিকা লাগবে। আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে ৭০ ভাগ মানুষকে দুই ডোজ টিকা দিতে দিতে গেলে ১৩ কোটি টিকা লাগবে। এখন মাঠপর্যায়ে ৪ কোটি ৬৩ লাখ টিকা আছে। আরও ৬ কোটি ৫৫ লাখ টিকা চলতি মাসের মধ্যে আসবে। ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে আরও ৯ কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে। আগামী ৩১ মার্চের ১৬ কোটি ৮৫ লাখ টিকা হাতে থাকবে। টিকার কোনো ঘাটতি হবে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বুস্টার ডোজের পাশাপাশি করোনার টিকার অন্যান্য কর্মসূচি চালু থাকবে। শিক্ষার্থীসহ অন্যদের টিকাদান অব্যাহত থাকবে।