সব ধরনের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনদিনের ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।
এসময় দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের ২৪ দফা নির্দেশনাও দেন প্রধানমন্ত্রী।
জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশ ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আপনারা যে বিশাল কাজ গুলো করছেন তার মধ্যে কিছু সমস্যার বিষয়ে আপনাদের ফোকাস করার আহ্বান জানাই। দেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছে যাওয়ায় দায়িত্ব বেড়ে গেছে। সরকারি সেবা নিতে সাধারণ মানুষ যেন কোনোভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হন, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শুদ্ধাচার বাস্তবায়নের পাশাপাশি দুর্নীতি প্রতিরোধে সোচ্চার হতে হবে।’
দেশে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমিত হচ্ছে উল্লেখ করে এ বিষয়ে আগের মতো সজাগ ও সচেতন থেকে ডিসিদের কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সংক্রমণের হার যেন না বাড়ে সেজন্য জেলা প্রশাসকদের ব্যবস্থা নিতে হবে। ওমিক্রন মোকাবিলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
দক্ষ ও সেবামুখী প্রশাসন গড়ে তুলতে সরকার বদ্ধপরিকর জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে জেলা প্রশাসকদের আরও কার্যকরি ভূমিকা রাখতে হবে।’
করোনাকালেও দেশের অর্থনীতির সূচকে ঈর্ষণীয় উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তৃণমূলের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করছে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার আরও উন্নতি হবে।’
এ সময় ধর্মীয় উগ্রবাদ রোধে কঠোর ভূমিকা নেওয়া এবং মাদকবিরোধী অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জেলা প্রশাসকদের কাজ করার নির্দেশও দেন।
ডিসি সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার। পরে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনের কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এরপর ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী।
এবার ডিসি সম্মেলনের ভেন্যু রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন। মহামারির কারণে দুই বছর পর এই সম্মেলন আয়োজনে সক্ষম হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে ধন্যবাদ জানান। সম্মেলন শেষ হবে ২০ জানুয়ারি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এবার ডিসি সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ২৬৩টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে।
সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলন করা হয়ে থাকে।