বিগত বছরগুলোয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত করা হলেও এবার বেলা দুইটার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। পাশাপাশি কোন খাবারের দোকান এ এলাকায় খোলা রাখা যাবে না।
মঙ্গলবার রমনার বটমূলে আয়োজিত সংবাদ বিফ্রিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্ষ বরণে অন্যান্য বছর থেকে এবার একটু ভিন্নতা থাকবে। সেটি হলো- মেলায় পান্তা-ইলিশ ও খাবারের দোকান থাকবে না। অনুষ্ঠানটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। দুপুর ২টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। যাতে মানুষ এখান থেকে বের হয়ে খুব সহজে বাড়ি ফিরে ইফতার করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, দুপুর একটার পর কাউকে এই এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। রমনার বটমূল ও এর আশপাশের এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হবে। প্রতিটি প্রবেশ গেটে তল্লাশি করা হবে। সম্পূর্ণ এলাকা নজরদারিতে থাকবে। এছাড়া পুরো এলাকা ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। বটমূলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোশাক পরিহিত পুলিশের সঙ্গে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারাও কাজ করবে। তবে এই সময় যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।
বোম ডিসপোজাল ইউনিট, সোয়াত, ডগ স্কোয়াডের পাশাপাশি রমনার লেকে নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল মোতায়েন থাকবে।
বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২০০১ সালকে মাথায় রেখে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি কিছু বন্ধু রাষ্ট্র জঙ্গিদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে। উপমহাদেশে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ধারণা করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু রেডিক্যালাইজড সংগঠনের তৎপরতা লক্ষ্য করছি। সেকারণেই আমাদের এ বাড়তি নিরাপত্তা বলেন মোহা. শফিকুল ইসলাম।
কমিশনার বলেন, কোনো হামলার আশঙ্কা আমরা করছি না। যেহেতু নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছি, কোনো ঘটনাই উড়িয়ে দিচ্ছি না। প্ল্যান করে একটি ছুরি বা ব্লেড নিয়ে কেউ হামলা করতে পারে, বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ছোট শিশুদের না আনার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এসব এলাকায় শিশুদের না আনার অনুরোধ করছি, কারণ এসব স্থানে খাবারের কোনো দোকান থাকবে না। মুখোশ পরে আসা যাবে না। উচ্চ শব্দ তৈরি করে এমন বাদ্যযন্ত্র আনা যাবে না।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় যোগ দিতে হলে মাঝপথে যোগ দেওয়া যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখের বিশেষ আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রায় অংশ নিতে হলে আগে চেকিং হয়ে প্রবেশ করতে হবে। মাঝ রাস্তায় চাইলেই কাওকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কেও প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশের সদস্যরা কঠোর আচরণ করতে পারে।
বেলা ১১টার মধ্যে ছায়ানটের আয়োজন শেষ করতে হবে। আর দুপুর ২টার মধ্যে রমনা এলাকায় মেলা গুটিয়ে ফেলতে হবে। ১টার পরে প্রবেশের সব গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে।