আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমায় দেশের বাজারেও দাম কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের নিজ কার্যালয়ে চা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমছে, ইন্দোনেশিয়াও রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে—এমন পরিস্থিতিতে সরকার তেলের দাম রিভিউ (সমন্বয়) করবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এক-দুমাস আমরা রিঅ্যাসেস করবো। ৫-৭ দিনের মধ্যে মে মাসের পুরো তথ্য নিয়ে রিভিউ করবো।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে যেটা রিপোর্ট আছে, আজকে দাম কমেছে। আজকের দামের প্রভাব দেশের বাজারে ফেলতে সময় লাগবে এক থেকে দেড় মাস।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘সুখবর যেটা পাম অয়েলের দাম কমেছে। লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সয়াবিনের দামও কমার দিকে। ৬-৭ দিনের মধ্যে যে সভা হবে, সেখানে অ্যাসেস করে দেখে নতুন দাম নির্ধারণ করা হবে। আমরা ধারণা, বাড়ার সম্ভাবনা নেই। নতুন দাম অনুযায়ী দামটা কমবে। পাম অয়েলে তো যথেষ্ট প্রভাব পড়বে বলে মনে করি।’
চালের দাম বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মূলত চাল কনট্রোল করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এ ব্যাপারে আমাদের সাহায্য চাইলে, সাহায্য করবো। যতটুকু জেনেছি, খাদ্য মন্ত্রণালয় আটটি টিম কাজ করেছে। এসব টিম ইতোমধ্যে বেরিয়ে পড়েছে, জানার জন্য এবং কতটুকু স্টক আছে, তা বের করার চেষ্টা করছে।’
মন্ত্রী বলেন, কিছু কোম্পানি প্যাকেট করে প্রতি কেজি চাল ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি করেছে। দেশের মানুষ বেশি দামে পণ্য কিনছেন বলেই কোম্পানিগুলো বেশি মুনাফা করার সুযোগ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে তিন কোটি মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে। আমি কখনই বলিনি ১৭ কোটি মানুষের পয়সা বেশি হয়েছে। রিয়েলিটি (বাস্তবতা) হলো- দেশের ২০ ভাগ মানুষের লো ইনকাম (নিম্ন আয়)। ১৭ কোটি থেকে তিন কোটি বাদ দিলে যে ১৪ কোটি থাকে, তাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা প্রায় ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড এর মতো। দরিদ্র শ্রেণির তিন কোটি মানুষকে অ্যাডজাস্ট করা দরকার, সেটার চেষ্টাই করে যাচ্ছি। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের বড় কয়েকটি কোম্পানি তিন টাকায় প্যাকেট করে প্রতি কেজি চাল ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি করেছে। একই চাল খোলা বাজারে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেটা প্যাকেট করে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এটা ক্রেতারা কেন কিনছেন। ব্যবসায়রীরা লাভ করতে চাইবেই, ব্যবসায়ীরা চাইলেই বেশি দামে কিনবেন কেন। এ কারণে কোম্পানিগুলো অধিক মুনাফা করতে পারছে।
চা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে চায়ের উৎপাদন বেড়েছে, ভোগও বেড়েছে। এজন্য রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না।
মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।