এক সপ্তাহের ব্যবধানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু ওয়ার্ডে ৯৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
রোববার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে নবজাতক ওয়ার্ডে (এসআইসিইউ) ১ হাজার ৩৫৩ জন ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৭৪ নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছেন মোট ২ হাজার ৮৭৭ শিশু। মারা গেছে ২২ শিশু।’
দুপুরে হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, নবজাতক ওয়ার্ডে ৫০ শয্যার বিপরীতে ২০৪ নবজাতককে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডের বাইরে বারান্দায় অভিভাবকরা অপেক্ষা করছেন।
এছাড়া হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬ তলার ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, দুই ওয়ার্ডে বেড সংখ্যা ৬০টি। বর্তমানে ৪৪১ জন শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে সেখানে। ওই ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায় ঠাঁই পাওয়া যাচ্ছে না। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন শিশুর মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিউমোনিয়া, সর্দি, জ্বর ও পাতলা পায়খানায় আক্রন্ত হওয়ার পর তারা শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
হাসপাতালের নবজাতক (এনআইসিইউ) ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গড় হিসাবে ঢাকা সিলেটের তুলনায় ময়মনসিংহে নবজাতক মৃত্যুর হার অনেক কম। যেসব নবজাতক মারা গেছে তাদের বেশির ভাগ জন্মগত ত্রুটির কারণে মারা গেছে। এই হাসপাতালে মারা যাওয়াদের শতকরা ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ নবজাতক বিভিন্ন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ক্রুটি নিয়ে জন্ম নিয়েছিলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঋতু পরিবর্তনের কারণে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিন অনেক শিশুদের ভর্তি করানো হচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে বেশি রোগী আসছে। ৫০ শয্যার বেডে ২০০ থেকে ২৩০ নবজাতক প্রতিদিন ভর্তি থাকায় তাদের চিকিৎসা দিতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়াও প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের জনবল কম। তারপরও সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই যেকোনো শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত যেন সবাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।’