MYTV Live

ভালো ঘুমের উপায়

একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের জন্য প্রতিদিন কম-বেশি ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। আর রাতের ভালো ঘুম মানেই দিনের সমন্ত কাজ ঠিকঠাক মতো করার শক্তি যোগানো। তাই রাতে ভালো ঘুম খুব দরকার।

পরিপাটি বিছানা: গবেষণা প্রমাণ করেছে, যে রাতে অনিদ্রার কারণ হয় বিছানা। খুব নরম বা খুব শক্ত বিছানা মানুষের পেশির জন্য ক্ষতিকর। একটি পুরোনো বালিশ বা শক্ত বালিশ বা আপনার ঘুমানোর বাজে ধরন, একই ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। ফলে আপনি যখন আবিষ্কার করবেন বা খুঁজে পাবেন যে আপনার বিছানায় আরামদায়ক নেই, না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন পুরো রাত বা আধো ঘুম বা আধো জাগরণের মধ্যে কেটেছে। ফলে আপনার জন্য স্বস্তিদায়ক বালিশ বা বিছানা খুঁজে আনতে হবে যেটি আপনাকে ভালোভাবে ঘুমাতে সাহায্য করবে।

শোবার ঘর পরিষ্কার রাখুন: একটি বিশৃঙ্খল মন ও শোবার ঘরের মধ্যে একটি সম্পক আছে। ফলে একটি পরিষ্কার ঘরে ভালোভাবে ঘুমানো যায়। ফলে আপনার ঘুমের মাধ্যমে বিশ্রাম নেওয়াটি ভালো হয়। এর ফলে ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখাও কমে। এজন্য প্রতি সপ্তাহে একটি দিন আপনার শোবার ঘর ঘুমানোর জন্য নির্বাচন করুন। এজন্য আলাদা সময় বের করে রাখুন। ঘরের ময়লা আবর্জনাগুলো পরিষ্কার করুন। দিনের শেষে এই কাজ আপনার মনকেও পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন এবং ভালো রাখবে।

ঘরকে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ফ্রি রাখুন: টেলিভিশন, কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোন ঘুমকে আক্রান্ত করে। কারণ, এগুলো আমাদের শরীরের মেলাটোটিন তৈরি কমিয়ে দেয়। এ ছাড়া এই পণ্যগুলোর মাধ্যমে টেক্সট, ইমেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের স্ট্যাটাস ইত্যাদি অনেক মানুষের উপর প্রবল চাপ তৈরি করে। ফলে ভালোভাবে ঘুমানোর জন্য এই কম্পিউটার পণ্যগুলো সামনে থেকে সরিয়ে রাখুন, বন্ধ করুন। বিজ্ঞানীদের মতে, ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে কাজগুলো করলে ভালো। নিজেকে এই কাজগুলোতে রত না রেখে বই পড়া বা মেডিটেশনে ব্যস্ত রাখলে ভালো ফলাফল পাবেন।

এসি বা ফ্যানের তাপমাত্রা শরীরের উপযোগী করুন: যেকোনো ঘরের অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়া যেকোনো মানুষের রাতের অনেক সময়ের ঘুমের জন্য ক্ষতিকর। আবার বিজ্ঞানীদের মতে, রাতে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নেমে আসে। ফলে দিনের বেলায় আমাদের শরীরের যে আদর্শ তাপমাত্রা রাতে সেটি কমে, শরীরের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি কমে যায় বলে, তখন ঘরের তাপমাত্রা কমিয়ে বা শরীরের জন্য আদর্শ করে রাখলে আপনার ভালো ঘুম হবে। মনটিও স্বস্তিময় হবে। খুব তাড়াতাড়ি ঘুমাতে পারবেন। রাতে জেগে যাওয়ার সমস্যা দূর করতে পারবেন।

ভোরে ব্যায়াম করুন: সকালে ঘুম থেকে জেগে নিয়মিত ব্যায়াম করা একটি দারুণ উপায় হলো মানুষের রাতেও ভালো ঘুমানোর। একটি ভালো ফিটনেস ব্যবস্থাকে নিজের জীবনে প্রতিদিন নিয়ে আসতে পারলে সেরোটিন লেভেল বাড়ে, কোলেস্টরেল লেভেল কমে। বেঁচে থাকার মানসিকতাকে উন্নত করে এবং চাপ কমায়। গবেষণা আরও প্রমাণ করেছে, যারা সকালে ঘুম থেকে উঠে হাটেন, নানা ধরনের ব্যায়াম করেন, তারা তাদের হরমোনকেও নিয়মিত নিঃসরণ করতে পারেন। তাদের জীবনের জটিলতাগুলোও কমে।

দিনের বেলায় যথেষ্ট সূর্যালোক গ্রহণ করুন: আপনার শরীর যথেষ্ট আলো এবং অন্ধকার গ্রহণ করলে আপনার রাতের ঘুমটিও ভালো হবে। ফলে আলোগ্রহণের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো দিনের বেলা সূর্যের আলো পাওয়া যায় এমন যেকোনো জায়গায় মনভরে থাকুন।

ঘুমানোর সময় প্রশান্তিদায়ক সংগীত শুনুন: কিছু সংগীত বিশেষভাবে প্রশান্তিময় ঘুম ও রিলাকজেশনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই বিষয়ে উদাহরণ হিসেবে মারকোনি ইউনিয়নের গান ওয়েটলেসের কথা বলা যায়। এই গানটি মানুষের রিলাকজেশনের ক্ষেত্রে প্রমাণিত। কেউ কেউ আরও বলেছেন, একটি ভেঙে পড়া বা শ্রান্তিময় শরীরের জন্য গানটি যথেষ্ট প্রশান্তি বয়ে আনে। এই ধরনের গান রাতে শোনার ফলে আপনি আপনাকে রিলাকজেশনে পেতে পারবেন এবং ঘুমের স্রোতে ভেসে বেড়াতে পারবেন।

প্রয়োজনীয় তেল ব্যবহার করুন: আমাদের বাংলাদেশে ঘুমানোর জন্য নানা রকমের তেল আছে। যেমন নিদ্রাকুসুম তেল। আবার এই শরীরের জন্য উপকারীও বটে। বিদেশের তেলের মধ্যে ল্যাভেন্ডার, দামেক্স রোজ আছে। এই তেলগুলো মানুষের শরীরকে দারুণভাবে প্রশান্তিময় করে, ভালো ঘুমানোর জন্য মাথা ঠান্ডা করে। আরো ভালো হয়, ঘুমানোর আগে ভালোভাবে গোসল করে তেল দিয়ে শুয়ে পড়া।

ইয়োগা নিদ্রা অনুশীলন করুন: বেশিরভাগ লোক স্বীকার করেছেন যে, ইয়োগা ও মেডিটেশন মানুষের মধ্যে প্রশান্তিময়তা ও মাথাকে ঠান্ডা রাখার প্রক্রিয়া তৈরি করে। তবে বেশিরভাগ মানুষই জানেন না, এই মানসিক ব্যায়ামগুলোর মাদ্যমে একটি শক্তিশালী ঘুমের অভ্যাসও মানুষের হয়। ঘুমানোর জন্য ভালো ইয়োগা হলোÑইয়োগা নিদ্রা। এ ছাড়া, শবাসন করতে পারেন।

Related Articles

Stay Connected

22,878FansLike
3,802FollowersFollow
20,900SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles