তুরাগ নদের আশপাশে যত দূর চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। মহাসড়ক, খোলা জায়গা, ঘরবাড়ির ছাদ, পাড়ে ভিড়িয়ে রাখা নৌকা, থমকে থাকা বাস, ট্রাক বা পিকআপ ভ্যানে হাজারো মানুষ। কেউ বসে, কেউবা দাঁড়িয়ে তুলেছেন প্রার্থনার দুই হাত। ক্রন্দনরত মুসল্লিদের ‘আমিন’, ‘আমিন’ ধ্বনির মধ্যে দিয়ে শেষ হয় বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।
বিশ্ব শান্তি, সারা দুনিয়ার মুসলিমদের পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব, পরিপূর্ণ হেদায়েত, আল্লাহর সব হুকুম মানা আর নবী করীমের (সা.) দেখানো পথে জীবন গড়ার জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে আল্লাহর কাছে নিজেদের অন্তরের খাহেশাত মুক্ত, রাগকে বশ, নাফরমানিকে ঘৃণা, ভালোবাসা ছড়িয়ে বিশ্ব মুসলিম ভাতৃত্ব গড়া ও দ্বীনের জন্য নিজেদের কবুল করার বিশেষ আর্জি জানানো হয়।
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে ২২ জানুয়ারি, দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো এবারের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী এ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। এর আগে বাদ ফজর বয়ান করেন ভারতের মাওলানা মুরসালিন। আর হেদায়তি বয়ান করেন মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। তাদের বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা জিয়া বিন কাসিম।
মোনাজাতে অংশ নিতে আজ সকাল থেকেই টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের দিকে আসতে থাকেন সাধারণ মুসল্লিরা। তাঁদের অধিকাংশই রাজধানী ঢাকা ও তার আশপাশের জেলার। এর মধ্যে মোনাজাতের সময় মুসল্লিরা অবস্থান নেন ইজতেমার মাঠসংলগ্ন সড়ক-মহাসড়কে। মুসল্লিদের চলাচলের সুবিধার্থে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগ। যান চলাচল বন্ধের কারণে হেঁটেই ইজতেমাস্থলে জড়ো হন মুসল্লিরা।
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুটি পর্বে অনুষ্ঠিত হলো। প্রথম পক্ষ বা বাংলাদেশি মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করেন ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি। গত শুক্রবার থেকে শুরু হয় মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের ইজতেমা। আজ আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো তাদের ইজতেমা।