একসময় সেন্সর বোর্ড আটকে দেয় ‘পাঠান’। যে বিতর্কের শুরু একটি গান থেকে, যেখানে দীপিকার গায়ে ছিল গেরুয়া বিকিনি। সেন্সরের বাধা পেরোলেও সিনেমাটি নিয়ে একের পর বিতর্ক চলতেই থাকে। বলিউড বাদশা শাহরুখের ‘পাঠান’ আটকাতে ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে সোচ্চার বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী। আতঙ্ক যেন বেড়েই চলেছে। এর মধ্যেই রাত পোহালে মুক্তির প্রহর গুনছে সিনেমাটি।
গতকাল সোমবার ভারতের গুজরাটের সুরাতের এক সিনেমা হলে স্থানীয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা–কর্মীরা সিনেমাটি মুক্তিতে বাধা দেন। এ সময় তাঁরা সিনেমার হল ঘেরাও করেন, ঘুরে ঘুরে ‘পাঠান’–এর পোস্টার ছিঁড়তে থাকেন। কেউ কেউ সিনেমা বন্ধের স্লোগান দেন। মুহূর্তের মধ্যে শুরু হয়ে যায় হইচই। একসময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে এগিয়ে আসে পুলিশ। তারাও কিছুটা বাধার মুখে পড়ে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সিরাতের এই ঘটনার এক দিন আগেই আসামে বজরঙ্গি দলের সদস্যরা উঠেপড়ে লেগেছিলেন ‘পাঠান’ সিনেমার প্রদর্শনী আটকাতে। তাঁরা গুয়াহাটির নারেনগিতে ‘পাঠান’–এর মুক্তি আটকাতে হামলা চালান সিনেমা হলে। তাঁদের দাবি, ‘পাঠান’ এখানে চালানো যাবে না। এ সময় পাশেই এই বজরঙ্গি দলের অন্য শাখার সদস্য ‘পাঠান’-এর পোস্টার ছিঁড়ে আগুন ধরিয়ে দেন। গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি আসামের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত গড়ায়। পরে তিনি ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে সরাসরি নির্দেশ দেন।
এর আগে গত শনিবার গুজরাটের প্রেক্ষাগৃহমালিকদের হুমকি দিয়ে প্রকাশ্যে ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন এক যুবক। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সেই যুবক ভিডিওতে বলেছিলেন, প্রেক্ষাগৃহে ‘পাঠান’ দেখানো হলেই সিনেমা হলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হবে। গুজরাটের এমন ঘটনায় সেই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর ফোনটি জব্দ করা হয়েছে। গুজরাটেই নয়, ‘পাঠান’ নিয়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ভারতে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ঘটছে।
এ ঘটনায় মধ্যপ্রদেশেও উত্তাপ ছড়ায়। সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার অযোগ্য, এমনটাই বলেছিলেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। তিনি দীপিকার আপত্তিকর পোশাক নিয়ে কথা বলেন। এমন সিনেমা নিষিদ্ধ হোক, এটাও তিনি চেয়েছিলেন। সে সময় গণমাধ্যমে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘বেশরম রং’ গানের পোশাকগুলো অত্যন্ত নোংরা মানসিকতা থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আপত্তিকর এসব বিষয়বস্তু বাদ না দিলে মধ্যপ্রদেশে সিনেমাটি মুক্তি পাবে কি না সন্দেহ আছে। ‘পাঠান’ বিতর্ক নিয়ে কেউ কেউ ব্যক্তি শাহরুখকেও আক্রমণ করেছেন। তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। অযোধ্যার সাধু পরমহংস আচার্য শাহরুখ খানকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘তাঁকে (শাহরুখ) সামনে পেলে পুড়িয়ে মারা হবে।’ সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।