প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে ১৬ রানে হারিয়ে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ স্বাদ দিল টাইগাররা। যেকোনো ফরম্যাটের ক্রিকেটে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথমবার এমন কীর্তি গড়ল বাংলাদেশ।
হোম অব ক্রিকেট খ্যাত মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার।
ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালো করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদারের অনবদ্য উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৫৫ রান।
ক্যাচ মিস আর বাজে ফিল্ডিংয়ের মহড়ায় বারবার সুযোগ হারায় সফরকারীরা। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে আর্চারের বলে শর্ট থার্ডম্যানে রনির সহজ ক্যাচ মিস করেন তরুণ স্পিনার রেহান আহমেদ।
যদিও জীবন পেয়ে তা কাজে লাগাতে পারেননি রনি। ২২ বলে ২৪ রান করে আদিল রশিদের বলে আউট হয়ে যান তিনি।
আরেক প্রান্তে তখন রীতিমতো ঝড় তোলেন লিটন। ৪১ বল খেলে ৮ বাউন্ডারিতে অর্ধশতক পূরণ করেন লিটন।
ফিফটির পর দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী হন তিনি। যদিও বেশি দূর এগোতে পারেননি। ক্রিস জর্ডানের করা শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে সল্টের হাতে ধরা পড়েন। তার আগে ৫৭ বল খেলে ১০ চার আর এক ছক্কায় করেন ৭৩ রান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তার ক্যারিয়ার-সেরা ইনিংস।
এদিকে রনি ফিরে যাওয়ার পর ওয়ান ডাউনে নামা শান্ত আজও দারুণ ব্যাটিং করেন। ২ ছয় আর ১ চারে ৩৬ বলে ৪৭ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
শেষদিকে বংলাদেশের ইনিংসে রান একটু কম ওঠে। ২ উইকেট পড়ার পর মাঠে নামা সাকিব আজ ব্যাটে হাতে ভালোকিছু করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় সফরকারীরা। সল্টকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দিয়ে প্রথম আঘাত হানেন অভিষিক্ত তানভীর ইসলাম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি তার প্রথম উইকেট।
৫ রানে সল্টকে হারানোর পর মালান-বাটলারের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ইংলিশরা। ফলে দ্বিতীয় উইকেটে জস বাটলার আর মালানের পঞ্চাশ রানের জুটিতে সহজ জয়ের স্বপ্ন দেখছিল ইংলিশরা। মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ১০০ রান তুলে ফেলে তারা।
তবে প্রয়োজনের সময় বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেকথ্রু এনে দেন পেসার মুস্তাফিজ। ৫৩ রান করা মালানকে ফেরান তিনি। পরের বলেই রান আউট হয়ে ফিরে যান বাটলারও। দুর্দান্ত এক ডিরেক্ট থ্রোতে তাকে রান আউট করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ইংলিশ অধিনায়ক আউট হন ৪০ রান করে।
একই ওভারে দুই সেট ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। বিপরীতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় ইংল্যান্ড।
এরপর ৯ রানে অলরাউন্ডার মঈন আলিকে, মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান তাসকিন। একই ওভারের শেষ বলে বেন ডাকেটকেও বোল্ড করেন তাসকিন। ফলে ২ উইকেটে ১০০ থেকে ৫ উইকেটে ১২৩ হয়ে যায় ইংল্যান্ড।
শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য ৩৬ রান প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের। ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই স্যাম কারানকে ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
এরপর শেষের সারির ব্যাটাররা চেষ্টা করলেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারীরা।
রোমাঞ্চকর ম্যাচে ১৬ রানের জয় পায় স্বাগতিক বাংলাদেশ।
এর আগে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটে এবং দ্বিতীয়টিতে ৪ উইকেটে জয় পেয়েছিল সাকিব বাহিনী। ৩ ম্যাচ সিরিজের ৩টিতেই জিতে টি-টোয়েন্টির বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা।