ঘাম দেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ঘামে সাধারণত গন্ধ হয় না। কিন্তু যখন ঘামের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া যুক্ত হয়; তখন ঘামে দুর্গন্ধ হয়। অনেকেই আবার ঘাম জমে ঠান্ডা গরম জনিত কাশির শিকার হচ্ছেন। তাই ঘাম নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়গুলো এখানে উল্লেখ করা হলো:
ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়:
১. নিয়মিত সাবান দিয়ে গোসল করতে হবে। অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল সাবান; গোসলের পানিতে সপ্তাহে অন্তত দুইদিন ডেটল বা স্যাভলন মিশিয়ে গোসল করা উচিত। নিম পাতা সেদ্ধ করে অথবা গোলাপের পাপড়ি গোসলের পানিতে মিশিয়ে দিলে নিম পাতার রস ত্বকের ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন অণুজীবকে ধ্বংস করবে। গোলাপের পাপড়ি সুন্দর ঘ্রাণ ছড়াবে।
২. বাইরের পোশাক নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। নিয়মিত সুযোগ না হলে বাসার বাইরে থেকে এসেই কাপড় রোদে বা বাতাসে মেলে দিতে হবে। মাঝে মাঝে কাপড় ডেটল বা স্যাভলন দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
৩. দেহের লোম নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। লোমের গোড়ায় খুব দ্রুত ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে।
৪. দেহের যেসব স্থানে আলো বাতাস পৌঁছাতে পারে না, সেসব জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৫. সালফার জাতীয় খাবার, যেমন- পেঁয়াজ, রসুন, লালচে মাংস, গ্রিল মাংস, অতিমাত্রায় কোমলপানীয়, অ্যালকোহল নিয়মিত খেলে ঘামে দুর্গন্ধ হয় তীব্র। এ জন্য নিজের দেহের ধরন বুঝে বডি স্প্রে, ডিওডোরেন্ট, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করতে হবে।
৬. গরমে সহজে হজম হয় এ ধরনের খাবার খেতে হবে। আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে। নিয়মিত দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করা উচিত। এতে দেহের তাপমাত্রার সাম্যাবস্থা বজায় থাকবে।
৬. অনেকের হাত-পায়ের তলা প্রচুর ঘেমে যায়। সুযোগ হলে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।
৭. অন্তর্বাস, মোজা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া স্কুল, কলেজ বা কর্মস্থলে নিয়মিত চামড়ার জুতো ব্যবহার করতে হলে, মাঝে মাঝে জুতো রোদে দিতে হবে। এতে জুতোর ভেতরে জমে যাওয়া রোগ-জীবাণু মারা যাবে। একই জুতো বার বার ব্যবহার না করে, কয়েক জোড়া জুতো ব্যবহার করতে হবে।
৮. অতিমাত্রায় মেকআপ বা হেয়ার ড্রায়ার যাদের ব্যবহার করতে হয়; তারা বাসায় মেকআপ বিহীন থাকার চেষ্টা করবেন।
৯. মসুর ডাল বাটা, আটা-ময়দা, চালের গুড়া, মেথি বাটা গোসলের সময় সাবানের মতো করে মাঝে মাঝে ব্যবহার করলে ত্বকের রোগ-জীবাণু, মরা চামড়াগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে। দুর্গন্ধও কমবে।
১০. নিয়মিত টাটকা রঙিন শাক-সবজি, ফল, কাঁচা সালাদ খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। এতে ত্বকের উজ্জলতা ও রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপো বা হারপার থাইরয়েডিজম, সিস্টেমিক লুপাস ইরাইথ্রোম্যাটাস, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত রোগীদের হঠাৎ অতিমাত্রায় ঘাম হলে এবং বেশি দুর্গন্ধযুক্ত ঘাম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।