অর্ধ-যুগের বেশি সময় আগে রক্তক্ষয়ী এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চ্যান ওচা দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন। সোমবার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি আগামী মে মাসে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
২০১৪ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন সাবেক সেনাপ্রধান প্রায়ুথ চ্যান। এক দশকের বেশি নির্বাসনে থাকা সত্ত্বেও প্রায়ুথ চ্যান-ও-চার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক সরকার থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা পায়তংতার্ন। প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ৩৬ বছর বয়সী এই রাজনীতিক।
সেনা অভ্যুত্থানে আট বছর আগে তার বাবার নেতৃত্বাধীন ফেউ থাই পার্টির সরকারের পতন হয়। সেই দলটিকে আবার ক্ষমতায় আনাই তার লক্ষ্য।
সোমবার প্রকাশিত সরকারি রয়্যাল গেজেটে একটি বিবৃতিতে সংসদকে বিলুপ্তির ঘোষণা করা হয় এবং নির্বাচন কমিশন পরবর্তীতে ভোটের তারিখ নিশ্চিত করবে বলে জানানো হয়। তবে ৭ মে কিংবা ১৪ মে ভোটের আয়োজনের সম্ভাব্য দিন হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৪ সালের অভ্যুত্থানের পর দ্বিতীয় এবং ২০২০ সালে ব্যাংককে তরুণদের নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্রপন্থী ব্যাপক বিক্ষোভের পর দেশটিতে প্রথমবারের মতো এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দেশটিতে ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় এবং মহামারি পরবর্তী ধীরগতির পুনরুদ্ধারের মাঝে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নির্বাচনের অনানুষ্ঠানিক প্রচারণা চলছে।
২০১৯ সালে বিতর্কিত এক নির্বাচনের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতায় থাকার পথ দৃঢ় করেন প্রায়ুত। থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে দীর্ঘসময় ধরে ক্ষমতায় থাকার বিরল নজিরও সৃষ্টি করেছেন ৬৮ বছর বয়সী এই সাবেক সেনাপ্রধান।
ভোটাররা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাকে দেখতে চান, এই বিষয়ে রোববার একটি সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রায়ুত মাত্র ১৫ শতাংশের কিছু বেশি জনপ্রিয়তা নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছেন। থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পায়েটংটার্ন শিনাওয়াত্রার তুলনায় ৩৮ শতাংশ পিছিয়ে আছেন প্রায়ুত।
থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ২ হাজার মানুষের ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করেছে। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারা ফেউ থাইকে ভোট দেবেন। আর প্রায়ুতের ইউনাইটেড থাই ন্যাশন পার্টিকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন মাত্র ১২ শতাংশ মানুষ।