নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) চট্টগ্রাম জেলার তৎকালীন কমান্ডার এরশাদ হোসাইন ওরফে মামুনকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই অভিযোগের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকায় অপর তিন আসামিকে বেকুসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভুঁঞা এ রায় দেন।
দণ্ডিত এরশাদ হোসাইন ওরফে মামুন দিনাজপুর জেলার সরকারপাড়া গ্রামের মো. রিয়াজুল ইসলামের ছেলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বলছে, তিনি জেএমবির চট্টগ্রাম জেলার কমান্ডার ছিলেন।
খালাস পাওয়া তিনজন হলেন- গাইবান্ধা জেলার তুলশীপাড়ার আক্তার হোসেন সরকারের ছেলে বুলবুল আহমেদ সরকার ওরফে ফুয়াদ, ঝিনাইদহ জেলার কোট চাঁদপুরের মমিনুল ইসলামের ছেলে মো. সুজন এবং চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী থানার ইছানগর এলাকার আব্দুল গণির ছেলে মাহাবুবুর রহমান ওরফে খোকন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. নোমান চৌধুরী বলেন, চার আসামির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনের ৪ ও ৬ ধারায় অভিযোগ ছিল। বিস্ফোরক দ্রব্য যার থেকে উদ্ধার করা হবে তার সাজা অবশ্যই হবে। যেহেতু তিনজনের কাছ থেকে কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি তাই তাদেরকে বিজ্ঞ আদালত বেকুসুর খালাস দিয়েছেন। আর আসামি এরশাদ হোসাইনকে চার ধারায় ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, অনাদায়ে আরো এক বছর ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ মার্চ নগরীর আকবরশাহ থানার মাজার রোডের এনআর স্টিল মিলের সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। ওই বাসা থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম, বিস্ফোরক দ্রব্য, বেশ কিছু বইসহ এরশাদকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। অভিযানের সময়ে অন্য আসামিরা পালিয়ে যান। এই ঘটনায় আকবর শাহ থানায় এসআই শহিদুর রহমান বাদি হয়ে মামলা করেন।
২০১৫ সালের শেষের দিকে নগরের কর্ণফুলী থানায় এক জঙ্গিবিরোধী অভিযানে বুলবুলসহ অন্য তিন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের আকবর শাহ থানার এই বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০১৬ সালের ৮ এপ্রিল চারজনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আকবর শাহ থানার এসআই মোহাম্মদ সোলায়মান।
২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর চার আসামির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনের মামলায় অভিযোগ গঠন করে আদালত। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
এরপর চলতি বছরের ১১ এপ্রিল এই মামলায় যুক্তি-তর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৯ মে মঙ্গলবার সময় নির্ধারণ করেছিলেন আদালত।