গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. মো. আজমত উল্লা খান গাজীপুর সিটিকে আধুনিক নগরীতে রুপান্তর করার লক্ষ্যে ২৮টি প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
রোববার বেলা পৌনে ১১ টার দিকে তিনি নগরীর প্রকৌশলী ভবনে ওই ইশতেহার ঘোষণা করেন।
লিখিত ইশতেহারে আজমত উল্লা বলেন, আমি নির্বাচিত হলে নগর ভবন হবে সকল নাগরিকদের জন্য অবাধ ও উন্মুক্ত এবং পূর্ণাঙ্গ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। নির্বাচিত হলে নগরীবাসীর একজন সেবক হিসাবে যেসকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
নির্বাচনী ইশতেহারে আজমত উল্লাহ খান বলেন, ২৫ মে গাজীপুর সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচন সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যৎ নগর জীবন। যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে যথাযথ সেবা পেতে হলে সে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে সৎ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা অনিবার্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নেতৃত্বের অদক্ষতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে আমরা তা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে বর্তমান সরকার গাজীপুর সিটির উন্নয়নে বহু সহায়তা করেছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা, সততা ও স্বচ্ছতার অভাবে সরকারি বরাদ্দকৃত অনেকাংশ অর্থের ব্যয় না হওয়ায় শহরের সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, শৈশবকাল থেকে আমি মানবসেবায় নিয়োজিত থেকে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গাজীপুর মহানগরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। প্রায় ৫৮ বছর যাবত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি। আপনাদের মূল্যবান ভোটে মেয়র নির্বাচিত হলে আমি একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, ব্রিজসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সেবামূলক খাতগুলোকে আরও শক্তিশালী করে সেবার মানকে সুনিশ্চিত করতে এক বছর, দুই বছর ও পাঁচ বছর মেয়াদি তিন স্তর বিশিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করবো।
নির্বাচনী ইশতেহারে আজমত উল্লা খান যে ২৮ টি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন, তা হচ্ছে- পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে পরামর্শ কমিটি/নগর উন্নয়ন সমন্বয়ক কমিটি গঠন, সেবার মান বৃদ্ধিকরণ, হোল্ডিং কর, অধিগ্রহণকৃত ভূমির জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান, স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, গুরুত্ব বিবেচনায় সড়ক উন্নয়ন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্টজনের নামে রাস্তার নামকরণ ও নির্মাণ কাজের গুনগতমান নিরীক্ষার জন্য শক্তিশালী মনিটরিং টিম গঠন। যানজট নিরসন, পার্কিং-ফুটপাতসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, সংযোগ সড়ক নেটওয়ার্ক, শ্রমিক কর্মচারী ও বস্তিবাসীদের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতকরণ। শিল্পমালিক ও ব্যবসায়ী সামাজের ভোগান্তি কমাতে জিসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়ে হেল্প-ডেক্স তৈরি, ওয়ার্ড সেন্টার ও ডিজিটাল কামান্ড সেন্টার নির্মাণ, বর্জ্য ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রসারের উদ্যোগ, ক্রীড়া উন্নয়ন, সাংবাদকর্মীদের সহায়তা, বয়স্ক-প্রতিবন্ধী ও সুবিধাবঞ্চিতদের সহায়তা প্রদান, পার্ক-উদ্যান নির্মাণ ও উন্নয়ন, ঈদগাহ-কবরস্থান ও শ্মশানের উন্নয়ন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহায়তা, জলাশয় দখলমুক্ত-নদী ও পরিবেশ রক্ষা, মশক নিধন, জিসিসির কাঁচা বাজার ও মার্কেট আধুনিকীকরণ ও হকারদের পুনর্বাসনের বাবস্থা, বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, গাজীপুরের ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ, মাদকমুক্ত নগর গড়ে তোলা, নতুন আয়ের উৎস সৃষ্টি ও স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত হলে তার পরিকল্পনাকে তিনস্তরে- প্রাথমিক স্তর , মধ্যম স্তর ও শেষ স্তরে ভাগ করে কাজগুলো করবেন।
এ সময় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, অ্যাডভোকেট ওয়াজউদ্দিন মিয়া, আফজাল হোসেন সরকার রিপন, এডভোকেট আমানত হোসেন খান, ইলিয়াস আহমেদ, মজিবুর রহমান, আব্দুল হাদী শামীম, অ্যাডভোকেট রিনা পারভীন, মাসুদ রানা এরশাদ উপস্থিত ছিলেন।