কয়েক দিন সাগরে ভেসে থাকার পর ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় আচেহ প্রদেশে পৌঁছেছেন ২৬৪ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। রবিবার রাতে পশ্চিম পিউরুলাক শহরের একটি সৈকতে দু’টি নৌকায় করে তারা পৌঁছান। শরণার্থীদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
আচেহ প্রদেশের স্থানীয় কর্মকর্তা ইস্কান্দার জানিয়েছেন, শরণার্থীদের দলে ১১৭ জন পুরুষ, ১৪৭ জন নারী এবং ৩০ জন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি নৌকা উপকূলের কাছাকাছি ডুবে গেলে শরণার্থীরা হাঁটতে হাঁটতে তীরে ওঠেন। তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের জলসীমা থেকে এই রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিয়েছে।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রহীন হিসেবে দেখা হয়। নাগরিকত্বের স্বীকৃতি না পাওয়ায় তারা ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হন। নির্যাতন এড়াতে তারা প্রতিবছর বিশেষত অক্টোবর থেকে এপ্রিলের শান্ত সমুদ্র মৌসুমে কাঠের নৌকায় মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া বা বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর দিকে পাড়ি জমান।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার কোস্টগার্ড প্রায় ৩০০ অভিবাসী নিয়ে দুটি নৌকাকে তাদের জলসীমা থেকে বের করে দেয়। স্থানীয় প্রশাসন তাদের কিছু খাদ্য ও পানি সরবরাহ করলেও নিরাপদ স্থানে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে রোহিঙ্গাদের পৌঁছানো প্রায় নিয়মিত ঘটনা। গত নভেম্বরে একই উপকূলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে, যেখানে শতাধিক শরণার্থীকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী।
১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থীকনভেনশনে ইন্দোনেশিয়া স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার একটি ইতিবাচক ইতিহাস রয়েছে দেশটির। শরণার্থীদের সাময়িক আশ্রয় দেওয়া হলেও তাদের ভবিষ্যৎ ঠিক করতে স্থানীয় সরকারের এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স