আওয়ামী লীগ সরকারের মতো অন্তর্বর্তী সরকারও আলোচনা না করে জ্বালানির দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা। বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর আইসিসিবিতে আয়োজিত গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং পণ্যের মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তারা এ অভিযোগ করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বসিরউদ্দীন বলেন, বিগত সরকারের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম এবং করের বোঝা জনগণের ওপর পড়ছে। তিনি জানান, গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং বিনিয়োগে ক্ষতি হচ্ছে। বর্তমানে নতুন শিল্প সংযোগের জন্য পেট্রোবাংলা প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৭৫ টাকা প্রস্তাব করেছে। ব্যবসায়ীরা এ ধরনের হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এর ফলে শিল্পখাতে বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে।
পোশাক খাতের সহায়ক শিল্প হিসেবে গড়ে ওঠা গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং পণ্যের প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে পোশাক শিল্প থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তবে একে একে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, ঋণের উচ্চ সুদহার এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার কারণে শিল্পখাত উন্নতিতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘‘গত ১৫ বছর ধরে সরকার আমাদের সাথে কোনো আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা দেশের সবচেয়ে বড় পাওয়ার প্ল্যান্টের স্টেকহোল্ডার। আমাদের সাথে কথা না বলেই এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।’’ বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘‘এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী হিসেবে মনে করি। এর ফলে আমাদের পক্ষে পণ্য রপ্তানির খরচ বাড়বে এবং প্রতিযোগিতা কঠিন হবে।’’
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বসিরউদ্দীন আরও বলেন, ‘‘যারা অর্থ পাচার করেছে, তাদের কারণে আজ আমাদের দেশকে এই দুর্ভোগ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এই দুর্নীতির খেসারত সবাইকে বহন করতে হচ্ছে।’’
গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং পণ্যের মেলা ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। মেলায় ২৫টি দেশ থেকে ৫০০ প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। এতে দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক বৃদ্ধি ও নতুন বাজার খোলার সুযোগ সৃষ্টি হবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে।