ঢাকা , সোমবার, ০২ জুন ২০২৫ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই সনদ করব এটাই আমাদের লক্ষ্য : প্রধান উপদেষ্টা শাকিব খানের সঙ্গে ছবি তুলে মিষ্টি জান্নাতের ‘স্টান্টবাজি’ যে ‘জাদু’তে মোহাম্মদপুরের যানজট উধাও তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজের নাম বহালের নির্দেশনা দিনমজুর ভাড়া করে কুষ্টিয়া শহর যুবলীগের মিছিল, কোদাল-ঝুড়িসহ আটক ১০ কমলো এলপি গ্যাসের দাম জার্মানির হাসপাতালে আগুনে মৃত্যু ৩, আহত ৩৫ এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন ক্লাসেন সিঙ্গাপুরের বৈঠকেও মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তানের জেনারেলরা, পরোক্ষ হুঁশিয়ারি চলছে হজের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, সৌদি পৌঁছেছেন ১৩ লাখ মুসল্লি অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন নায়ক বাপ্পী বাজেটে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে দুঃসংবাদ বাজেট আরও ছোট হওয়া উচিত ছিল: আমীর খসরু দুদক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে: অর্থ উপদেষ্টা ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙতে গ্রেটা থুনবার্গ এখন সমুদ্রপথে রয়েছেন নতুন বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ছে, নাকি কমছে! যা জানা গেলো এবার ইউক্রেনীয় ড্রোনের বিশাল বহর আকাশেই গুঁড়িয়ে দিলো রাশিয়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাজেট অনুমোদন জোলির সঙ্গে বিচ্ছেদ, ৮ বছর পর নীরবতা ভাঙলেন ব্র্যাড পিট প্রধান উপদেষ্টার কাছে নতুন ছয় নোটের ছবি হস্তান্তর

বাছুর দেওয়ার ফটোসেশন করে খিচুড়ির প্যাকেট ধরিয়ে দিলো এনজিও

  • আপলোড সময় : ১৭-০১-২০২৫ ১০:৪৫:০৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০১-২০২৫ ১০:৪৫:০৯ পূর্বাহ্ন
বাছুর দেওয়ার ফটোসেশন করে খিচুড়ির প্যাকেট ধরিয়ে দিলো এনজিও
প্রকল্পের নাম হতদরিদ্রদের মাঝে উন্নতজাতের গাভীর বাছুর বিতরণ। বরাদ্দ রয়েছে ৫ লাখ টাকা। সুফলভোগী দুস্থ ১০ নারী। কিন্তু তাদের প্রশিক্ষণের নামে বাছুর দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে বাছুর হাতে ছবি তুলে খিচুড়ির প্যাকেট দিয়ে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। কাউকে বাছুর দেওয়া হয়নি। খামার থেকে ১০টি বাছুর এনে ছবি তোলা শেষে আবার খামারেই ফেরত পাঠানো হয় সেই বাছুরগুলো।গরু না পাওয়ায় হতাশ ওই সব গরিব দুস্থ নারীরা। ফটোসেশনের দুই সপ্তাহ পার হলেও এখনও তাদের বাছুর বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। প্রকল্পের টাকা পুরোটাই আত্মসাতের অপচেষ্টা করা হয়েছে। এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজার এলাকার মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলুর বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) আর্থিক সহায়তায় মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা এনজিওর উদ্যোগে ১০ জন দুস্থ নারীকে গাভীর বাছুর দেওয়ার কথা বলে রেলবাজারে নিয়ে আসা হয়। নিজের পরিচিত একটি খামার থেকে ১০টি গাভীর বাছুর গাড়িতে করে নিয়ে আসেন এনজিওটির নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু। এরপর এলাকার কিছু ব্যক্তিকে তার বাসভবন সংলগ্ন এনজিওর সামনে ডেকে এনে ১০ জন নারীকে দাঁড় করিয়ে গরু দেওয়ার ফটোসেশন করেন।পরে ওই সব নারীদের গাভীর বাছুর না দিয়ে ডিম-খিচুড়ির প্যাকেট দিয়ে বিদায় করা হয়। এরপর বাছুরগুলো আবার একই গাড়িতে করে একই খামারে ফেরত দিয়ে আসা হয়। সেখানে উপস্থিত অনেকেই গরু প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী পরিচালক বাবলু জানান পরে দেওয়া হবে।

কুবিরদিয়ার মাঠপাড়া গ্রামের আলম হোসেনের মেয়ে খুশি খাতুন বাবার বাড়িতে এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন। অন্যের বাড়িতে ও মাঠে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান।তিনি বলেন, ট্রেনিং এর কথা বলে আমাকে ডেকে নিয়ে আসছে। গাভীর বাছুর হাতে ধরিয়ে ছবি তোলে। কিন্তু আমাকে গাভীর দেয় নাই। বলছে এবার অন্য এলাকার লোকদের দেব, পরেরবার তোমাকে দেব। পরে খিচুরি ডিম খাওয়ায়ে বিদায় করছে। বাবলু কাকা ত্যাড়া মানুষ। বেশি কথা বললে আবার ধমক দেয়। তাই আর কিছু বলার সাহস পাই নাই।খুশি আরও বলেন, এর আগে একবার আমাকে একটা ছাগল দিয়েছিল বাবলু কাকা। তবে সেজন্য আমার কাছ থেকে নগদ ১৩০০ টাকা নিয়েছিল। এছাড়া পরে একটি গর্ভবতী ছাগলও নিয়েছিল

অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করে সংসার চালানো এক গৃহবধূ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের গাভী দেওয়ার কথা বলে ট্রেনিং ডেকে নেয়। তারপর ট্রেনিং শেষে আমাদের বাছুর হাতে দিয়ে ছবি তুলে বিদায় করেছে। বলছে, এখন না, পরে দেব। এখন পর্যন্ত পাইনি। ট্রেনিং এ আমরা বিভিন্ন গ্রামের দশজন মহিলা ছিলাম।

যে গাড়িতে গরুর বাছুরগুলো আনা নেওয়া করেছে সেই গাড়িচালক শুভ দাস বলেন, ওইদিন আমার গাড়ি নিয়ে মথুরাপুর এলাকার একটি গরুর খামার থেকে ১০টা বাছুর নিয়ে রেলবাজার বাবলু সাহেবের বাসার সামনে নেয়। পরে অনুষ্ঠান শেষে ওখান থেকে ওই বাছুরগুলো আবার মথুরাপুরের একই খামারে নামিয়ে দেওয়া হয়। এর বেশি কিছু জানা নেই।এ বিষয়ে অভিযুক্ত এনজিও মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু বলেন, আমরা ১০ জন ছাড়াও আরও কয়েকজনকে ডেকেছিলাম। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ১০ জনকে গাভীর বাছুর দেওয়া হয়েছে। বাকিদের পরের প্রকল্পে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, আমাকে অতিথি করে দাওয়াত দিয়েছিলেন, কিন্তু ব্যস্ততার কারণে যেতে পারিনি। প্রকল্পটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা নেই। তবে আমার অফিসে প্রত্যয়ন দেওয়ার কথা রয়েছে। তিনি প্রত্যয়ন নেওয়ার জন্য রিপোর্ট অফিসে জমা দিয়েছেন কি না দেখে বলতে পারব। তবে এরকম অভিযোগ থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে সে মোতাবেক প্রত্যয়ন দেওয়া হবে।বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) উপ-মহাব্যবস্থাপক (কর্মসূচি) মোস্তফা কামাল ভূঞার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশেষ প্রকল্পের আওতায় মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা নামের এনজিওকে আমরা ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। তার মধ্যে প্রথম অবস্থায় ৩ লাখ টাকা দিয়েছি। কার্যক্রম সন্তোষজনক রিপোর্ট পেলে তাকে বাকি ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, এ প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট ইউএনও বা তার প্রতিনিধিকে একীভূত করে কাজ করার নির্দেশনা রয়েছে। কারণ প্রকল্প বাস্তবায়নের রিপোর্টে ইউএনওর প্রত্যয়ন লাগবে। ১৫/২০ দিনের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। এখনও তার রিপোর্ট হাতে পাইনি। আমরা বিষয়টি পর্যক্ষেণ করছি। রিপোর্ট আসার পর যাচাই-বাছাই করে দেখব, ঘাপলা পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

কমেন্ট বক্স
জুলাই সনদ করব এটাই আমাদের লক্ষ্য : প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই সনদ করব এটাই আমাদের লক্ষ্য : প্রধান উপদেষ্টা