ঢাকা , সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫ , ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
এ ওয়ান পলিমার ও আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ডিলার সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত পরোয়ানা জারি হওয়া সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের ক্ষমতা ট্রাইব্যুনালের রয়েছে নোবেল শান্তি পুরস্কারের তথ্য ফাঁসের সন্দেহ, তদন্তে কমিটি শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড-জলকামান মসজিদুল আকসার খতিবের ওপর ৬ মাসের নিষেধাজ্ঞা আরিয়ানের বিরুদ্ধে মামলা করায় বিপাকে সমীর ওয়াংখেড়ে শিশুদের ‘নোবেল’ পুরস্কারে মনোনীত কিশোরগঞ্জের মাহবুব ঢাকায় সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা, তাপমাত্রা থাকবে অপরিবর্তিত ত্রাণ বিতরণ সিম্বলিক, মূল উদ্দেশ্য ছিল অবরোধ ভাঙা : শহিদুল আলম জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান দুই দিন পেছাল ভারী অস্ত্র নিয়ে পাক সেনাদের ওপর আফগানিস্তানের হামলা, সীমান্তে সংঘর্ষ গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ইসরায়েল সালিশ মনঃপূত না হওয়ায় পিটিয়ে ব্যবসায়ীকে হত্যা নওগাঁয় গণপিটুনিতে ডাকাত নিহত আমি এ দোকানের ‘বান্ধা কাস্টমার’: মারজুক রাসেল নববধূর সাজে নজর কাড়লেন সেলেনা গোমেজ মক্কায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের যেভাবে আবদার মেটালেন মুশফিক রুক্মিণীকে বিয়ে করা নিয়ে যা বললেন দেব নারীদের জন্য তারেক রহমানের ৬ অঙ্গীকার কিছু চিহ্নিত ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের ওপর দেওয়া উচিত নয়: বিএনপি

ইতিহাসের সবচেয়ে প্রলয়ঙ্কারী ভূমিকম্প, পলকেই ধসে যায় আস্ত শহর!

  • আপলোড সময় : ১৯-০১-২০২৫ ০৫:৩৬:৪৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-০১-২০২৫ ০৫:৩৬:৪৫ অপরাহ্ন
ইতিহাসের সবচেয়ে প্রলয়ঙ্কারী ভূমিকম্প, পলকেই ধসে যায় আস্ত শহর!
গত ৮ জানুয়ারি সারাবিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে তিব্বতের ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলা। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল গোটা তিব্বত। মাউন্ট এভারেস্ট থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে তিংরি এলাকায়, ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল এই কম্পনের উৎসস্থল।যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিকদের মতে, রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.১। জনবসতি কম থাকায় এই ভূমিকম্পে প্রাণহানি তেমন ঘটেনি। তবে গত ২৫ বছরের ইতিহাসে এমন কয়েকটি ভূমিকম্প হয়েছিল যার ফলে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল সেই দেশগুলো। কম্পনের মাত্রা তুলনা করলে প্রথমেই আসে ২০১১ সালে জাপানের উত্তর-পূর্ব উপকূলে ঘটে যাওয়া ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের কথা। এর ফলে সুনামি হয়। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ মারা যান। 
এই তালিকায় আছে, চীনের পূর্ব সিচুয়ানের ৭.৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্প। এর আঘাতে ৮৭ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ২০১৫ সালে নেপালে ঘটে যাওয়া ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ২০১৮ সালে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে ইন্দোনেশিয়ায়।

উপরোক্ত প্রতিটি ভূমিকম্পেই প্রকৃতির নির্দয় কশাঘাত আছড়ে পড়েছে মানবজাতির ওপর। ভূমিকম্পবিধ্বস্ত এলাকায় উঠেছে স্বজনহারাদের কান্নার রোল। এমনই আরও একটি ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের সাক্ষী হয়েছিল চীন। আজ থেকে প্রায় ৪৭০ বছর আগে সেখানে নেমে আসে এক মর্মান্তিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খাঁড়া।সময়টা ছিল ১৫৫৬ সালের ২৩ জানুয়ারি। শীতের ভোরে কেঁপে উঠেছিল চীনের শানসি প্রদেশ। আধুনিক রিখটার স্কেল না থাকার জন্য কম্পনের মাত্রা কত ছিল তা সঠিক মাপা যায়নি। পরবর্তীতে গবেষকেরা জানিয়েছিলেন কম্পনের মাত্রা ছিল ৮ থেকে ৮.৩-এর মধ্যে।

মারাত্মক এই ভূমিকম্পকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ানক’ আখ্যা দেওয়ার কারণ প্রাণহানি। চীন তো বটেই, বিশ্বের ইতিহাসেও এই রকম বিধ্বংসী ভূমিকম্প আর হয়েছে বলে জানা যায়নি। মিং সম্রাট জিয়াজিংয়ের আমলের ঘটনাটিকে ‘জিয়াজিং মহাভূমিকম্প’ হিসাবেও উল্লেখ করা হয়।বর্তমানের শানসি, শানসি, হেনান এবং গানসু প্রদেশে একযোগে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ওয়েই নদী উপত্যকা বলে মনে করা হয়। ভয়াবহ শব্দে ফেটে যায় মাটি, দেখা দেয় ফাটল। ফাটল থেকে গলগল করে উঠে আসতে থাকে পানি।তখন বিশ্বের জনসংখ্যা ছিল আজকের জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশের সমান। সেই সংখ্যাটা ছিল প্রায় ৪০ কোটির আশপাশে। প্রলয়ঙ্ককারী ভূমিকম্প কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৮ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। এমনই ছিল তার অভিঘাত।চীনা সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেদিন কেবল ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল প্রায় এক লক্ষ মানুষের। পরে নানাভাবে বাড়ি চাপা পড়ে বা অনান্য কারণে মৃত্যুর মিছিল গিয়ে প্রায় ৭ লক্ষ ৩০ হাজারে পৌঁছে ছিল। কেবল ভূমিকম্পের ফলে সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু নয়। এই বিপর্যয়ের ফল ছিল দীর্ঘমেয়াদি। সে কারণে পরবর্তীতে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পায়।

ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ‘ইয়াওডং’ নামে গুহা গৃহগুলো। সেই সময় অনেকেই শানসি প্রদেশে গুহায় বসবাস করতেন। প্রবল কম্পনে সেগুলো তাসের ঘরের মতো ধসে পড়ে। পাথর চাপা পড়ে ঘুমন্ত অবস্থাতেই মৃত্যু হয় বহু মানুষের।
শানসি শহরের পুরো পরিকাঠামোই ভেঙে পড়ে। পাহাড় কেঁপে ধুলোয় পরিণত হয় প্রায় গোটা শহর। ভূমিধ্বসে পুরো জনবসতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এই ভূমিকম্পের ব্যাপ্তি এতই বিশাল ছিল যে, তার ফল হয় সূদূরপ্রসারী। পরাঘাত (আফটার শক) চলে পরদিন সকাল পর্যন্ত। এর ফলে ব্যাপক ভূমিধসের সৃষ্টি হয়।এই ভূমিকম্পের পরই চীনে ভৌগোলিক দিক থেকেও নানা পরিবর্তন আসে। মাটি ফেটে পানি বেরিয়ে আসে বেশ কিছু জায়গা থেকে। বহু বাড়িঘর মিশে যায় মাটিতে। এমনকি সমতল ভূমি ভাঁজ হয়ে ছোট পাহাড়ের সৃষ্টি হয়। ইয়েলো আর ওয়েই নদীও প্লাবিত হয়ে ভাসিয়ে দেয় দু’কুল।

ভরা প্লাবনে সৃষ্টি হয় বন্যা। জমির পর জমি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ায় ফসলের পরিমাণ কমে যায়। দেখা দেয় দুর্ভিক্ষ। রোগবালাই ছড়িয়ে পড়া, সামাজিক বিশৃঙ্খলা বাড়তে থাকে।আজকের জনসংখ্যার সঙ্গে তুলনা করলে শানসি ভূমিকম্পের কারণে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ত বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞেরা। শানসি ভূমিকম্পের তুলনায় পৃথিবীতে আরও অনেক শক্তিশালী ভূমিকম্পের তাণ্ডব দেখেছে বিশ্ব। কিন্তু এত মৃত্যু হয়নি কখনও। শানসিতে এত মৃত্যু কেন হয়েছিল?সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, সেই সময় শানসি ছিল একটি ঘন জনবসতি পূর্ণ এলাকা। বেশির ভাগ বাসিন্দাই পাথুরে প্রাকৃতিক গুহাকে ঘরবাড়ি হিসাবে ব্যবহার করতেন। বাড়িগুলোও বানানো হত ভঙ্গুর মশলা দিয়ে। বিপদ ঘনিয়ে আসে এর ফলেই। ভূমিকম্পের ফলে পাথরের চাঁই খসে পড়ে মারা যান লক্ষ লক্ষ মানুষ।এই ঘটনার ভয়াবহতাই চীনের বাসিন্দাদের শিক্ষা দিয়েছিল, কীভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। এরপর থেকেই বাসিন্দারা গুহাবাস ছেড়ে হালকা বাঁশ ও কাঠের বাড়ি তৈরি করতে শেখেন।

১৫৫৬ সালের এই ভূমিকম্প মানবজাতির ইতিহাসে একটি অপূরণীয় ক্ষত। সেই সময় বিশ্বের জনসংখ্যা ছিল আজকের মাত্র ৫ শতাংশ। এই বিপর্যয়ে এত বিশাল সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়, যা আজকের হিসাবে কল্পনা করাও কঠিন। আজকের জনসংখ্যার আকারের সঙ্গে তুলনা করলে শানসি ভূমিকম্পের বিপর্যয়ের পরিমাণ অকল্পনীয়।

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
এ ওয়ান পলিমার ও আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ডিলার সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত

এ ওয়ান পলিমার ও আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ডিলার সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত