ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী দাফন নাকি হিন্দুধর্ম মতে সৎকার এই নিয়ে শুরু হওয়া নজিরবিহীন বিরোধের বিষয়টি ঢাকার আদালত হয়ে এখন বিচারাধীন হাইকোর্টে। দুই ধর্মের দুই স্ত্রীর টানাটানিতে ১০ বছর ধরে মরদেহটি রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের হিমঘরে।বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় বাতিল প্রশ্নে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রুলসহ বিষয় বস্তুর ওপর স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন। ফলে হাইকোর্টে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মর্গের হিমঘরে থাকা লাশটি যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায়ই থাকবে বলে জানিয়েছেন দ্বিতীয় স্ত্রীর পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মিজানুল হক। আদালতে দ্বিতীয় স্ত্রীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহাম্মদ মিজানুল হক।
রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সাবেক শিক্ষিকা হাবিবা আকতার খানমের দাবি, খোকা চৌধুরী ওরফে রাজীব চৌধুরী ওরফে খোকন চৌধুরী ওরফে খোকন নন্দী ওরফে রনজিত নন্দী তার স্বামী ১৯৮০ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। মুসলমান হিসেবেই ২০১৪ সালে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তবে প্রথম স্ত্রী মীরা নন্দীর দাবি, তার স্বামী কখনই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি।
ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী দাফন নাকি হিন্দুধর্ম মতে সৎকার এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তৎকালীন রমনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে এক পর্যায়ে বিষয়টি ঢাকার আদালত পর্যন্ত গড়ায়। দ্বিতীয় স্ত্রী হাবিবা খানম মামলা করলে ঢাকার সহকারী জজ আদালত ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর লাশ বারডেম ব্যবস্থাপনায় ও তদারকিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষণের আদেশ দেন। আইনী লড়াইয়ের এক পর্যায়ে বিষয়টি এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন।আইনজীবী বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী হাবিবা খানমের ভাষ্য হচ্ছে, ১৯৮০ সালে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে এফিডেভিট করে রাজিব মুসলমান হয়ে খোকন চৌধুরী ওরফে খোকা চৌধুরী ওরফে রাজিব চৌধুরী নাম রাখেন। ১৯৮৪ সালের ১৫ জুলাই তাদের বিয়ে হয়। ধর্মান্তরিত হলেও ব্যবসার প্রয়োজনে তার স্বামী আগের নাম (খোকন নন্দী) ব্যবহার করতেন। অন্যদিকে, ধর্মান্তরিত হবার বিষয়টিকেই জাল দাবি করেছেন প্রথম স্ত্রী মীরা নন্দী।