যুক্তরাষ্ট্রের আদালত চীনা অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ভ্রমণের মাধ্যমে সে দেশে সন্তান জন্মদানের ব্যবস্থা করার অভিযোগে এক নারীকে তিন বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দিয়েছেন। স্থানীয় সময় সোমবার ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালতে এই রায় ঘোষণা করা হয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত ফোবি ডংকে ৪১ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট বিচারক আর. গ্যারি ক্লাউসনার রায় ঘোষণার পরই তাকে হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এর আগে, গত সেপ্টেম্বরে ফোবি ডং ও তার স্বামী মাইকেল লিউকে তাদের কোম্পানি ‘ইউএসএ হ্যাপি বেবি’র মাধ্যমে ষড়যন্ত্র এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, এই দম্পতি চীনা নারীদের গর্ভাবস্থা গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে সাহায্য করতেন এবং সন্তান জন্ম দিয়ে শিশুদের মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ তৈরি করতেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী, দেশটিতে জন্ম নেওয়া যেকোনো শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পায়। এই নিয়ম অনেক বিদেশি নাগরিককে সন্তান জন্মের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করতে উৎসাহিত করেছে।
ফোবি ডং আদালতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, চীনের এক সন্তান নীতির কারণে তার মা বাধ্য হয়ে গর্ভপাত করেছিলেন। এ অভিজ্ঞতা তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম পর্যটন ব্যবসায় জড়াতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। প্রসিকিউটরদের মতে, ডং ও তার স্বামী অন্তত ১০০ জনেরও বেশি চীনা নারীকে এভাবে সহায়তা করেছেন।
তারা আরও জানান, ডং ও তার সহযোগীরা নারীদের কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতারণার প্রশিক্ষণ দিতেন। তাদের ঢিলেঢালা পোশাক পরার পরামর্শ দেওয়া হতো, যাতে গর্ভাবস্থা গোপন রাখা যায়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম পর্যটনের বিরুদ্ধে অভিযান ওবামা প্রশাসন থেকেই শুরু হয়েছিল। তবে বিষয়টি ট্রাম্প প্রশাসনের সময় আরও কড়াকড়ি হয়। জন্মভিত্তিক নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক চলমান থাকলেও আদালত এখন পর্যন্ত এটি পরিবর্তন করেনি।