বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিসহ সাত দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো অনশন কর্মসূচি পালন করছেন রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, আজ শনিবার বিকেল ৪টার মধ্যে দাবি পূরণের ঘোষণা না দেওয়া হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ডিএনসিসি আওতাধীন এলাকায় ব্যারিকেড কর্মসূচি পালন করবেন তাঁরা।এ দিকে অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের দুজন গতকাল অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আজ ১০ জন শিক্ষার্থী অনশনে রয়েছেন।আন্দোলনকারীদের নেতা নায়েক নূর মোহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজকে বিকেল ৪টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা না এলে, আমরা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করব।’
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গুলশান-১ এলাকায় অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে রাত সাড়ে ১১টায় অবরোধ তুলে নেয় তাঁরা। এর আগে সারা দিন মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন কর্মসূচি পালন করেন।গত বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণাসহ সাত দফা দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ ও অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা সংগঠন ‘তিতুমীর ঐক্য।’ পরে তারা কলেজের সামনে মহাখালীর প্রধান সড়ক অবরোধ করেন। এতে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সড়ক অবরোধের মধ্যে রাত পৌনে ৯টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে আন্দোলনরতদের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান। দাবি-দাওয়া সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে তুলে ধরার আশ্বাসেও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেনি শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে তিতুমীর কলেজের ৭ জন শিক্ষার্থী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রানা আহমেদ ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম চিকিৎসাধীন রয়েছেন।আন্দোলনকারীরা এর আগে ৭ জানুয়ারি কলেজটির প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টানিয়ে দেন। একই দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘ক্লোজডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি দেন তারা।
গুলশান ছাড়লেও ক্যাম্পাসের সড়ক ছাড়েননি তিতুমীরের শিক্ষার্থীরাগুলশান ছাড়লেও ক্যাম্পাসের সড়ক ছাড়েননি তিতুমীরের শিক্ষার্থীরাএরপর ৩ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ওই কমিটি ‘যথাযথভাবে’ কাজ করছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে শিক্ষার্থীদের আবাসিক খরচ বহন করা, একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার তৈরিতে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করা।