আগে ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার হতে হবে, তারপর নির্বাচনসহ অন্য কাজ করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।তিনি বলেন, “এই বিচার না হলে শহিদদের আত্মার সঙ্গে বেইমানি করা হবে। শহিদের আত্মা কষ্ট পাবে। যারা মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা, মর্যাদার সঙ্গে চলার স্বাধীনতা যারা এনে দিয়েছে; আমরা তাদের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না। সব খুনের বিচার করতে হবে। আমরা সব অপকর্মের বিচার চাই।”শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারির সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে তিনি আরও বলে, “দেশে যুগযুগ ধরে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের সম্পদ লুট করেছে, ইজ্জতের ওপর হামলা করা হয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর সবসময় দোষটা দেওয়া হয়েছে জামায়াতের ওপর। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে দেশের কোথাও জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মী দখলবাজি, চাঁদাবাজি করেছে তা কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। আমি নিশ্চিত এই ধরনের অপকর্মের আমাদের আমাদের কর্মীরা জড়িত নয়।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “জ্বালা, জ্বালা, বড় জ্বালা-এই স্লোগান যারা দিয়েছে, তারা মূলত ডাকাত, এরাই মানুষের ঘরবাড়ি দখল করেছে, জায়গা-জমি দখল করেছে, ইজ্জতের ওপর হাত দিয়েছে। মানুষদের বাস্তুভিটাহারা করেছে, আমরা সব অপকর্মের বিচার চাই।”
তিনি আরও বলেন, “ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ সবার। ইসলাম ধর্ম কারো ওপর জোর খাটানোর অধিকার রাখে না। অন্য ধর্মও কোনো ধর্মের ওপর জোর খাটাতে পারবে না।”জামায়াতের আমির বলেন, “গত আগস্টে সরকার পতনের পরে দেশে কোনো সরকার ছিল না, পুলিশ ছিল না। কেউ কাজ করেনি। অথচ জামায়াতে ইসলামী দায়িত্ব নিয়ে অন্যান্য ইসলামী দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তা নেমেছে। এখন এই দেশে আমরাই দায়িত্ব নেব। আমরাই এই দেশের মানুষের জান, মাল ও ইজ্জতের পাহারা দেব। আমরা বিভিন্ন ধর্মের প্রতিষ্ঠানগুলো পাহারা দেব।তিনি বলেন, “আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ কেবলমাত্র শুরু। এই দেশে মানুষের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত, সমাজ থেকে সকল প্রকার বৈষম্য দূর না হওয়া পর্যন্ত, এবং মানবিক একটি কল্যাণরাষ্ট্র গড়ে না উঠা পর্যন্ত আমাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।”
কর্মী সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, অধ্যাপক আহসান উল্লাহ, সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আমির সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরো অনেকে।