দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বড় জয় পাওয়ার পর বিজেপি নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তাদের দল বিপুল ভোটে জয় পাবে। আগামী এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি ইতিমধ্যে তৎপর হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, তৃণমূলও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
দিল্লিতে বিজেপির জয়ের মূল কারণ ছিল দুর্নীতিবিরোধী প্রচার। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও তার বিলাসবহুল জীবনযাত্রার ইস্যু নিয়ে বিজেপি প্রচার চালায়, যা ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধেও একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনো কারাগারে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও অনুব্রত মণ্ডল সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে। বিজেপি এসব ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে প্রচারে নামতে পারে।
তবে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো নেতৃত্ব সংকট। দিলীপ ঘোষ একসময় সংগঠনকে চাঙ্গা করলেও পরে দুর্বল হয়ে পড়েন। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে দল একজোট হলেও এখনো বিভক্তি কাটেনি। এছাড়া, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, ২০২৬ সালের নির্বাচনে তৃণমূল দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করবে। ২০২১ সালে তৃণমূল ২১৩টি, বিজেপি ৭৭টি এবং ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট ১টি আসন পেয়েছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দিল্লির নির্বাচনের প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে কতটা পড়বে, তা নির্ভর করছে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তির ওপর। যদি তারা নিজেদের শক্তভাবে গুছিয়ে নিতে পারে, তবে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন তৃণমূলের জন্য কঠিন হতে পারে। তবে বিজেপি যদি নেতৃত্ব সংকট কাটিয়ে না উঠতে পারে, তাহলে তৃণমূলের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।