ক্রিকেট মাঠ থেকে রাজনীতির মঞ্চ — দুই জায়গাতেই নিজের দক্ষতায় ইতিহাস গড়েছিলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি অধিনায়ক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে বর্তমানে তিনি মামলার বেড়াজালে বন্দি থাকলেও, তার প্রতি সম্মান জানাতে খাইবার পাখতুনখোয়া সরকারের সিদ্ধান্ত নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
প্রাদেশিক সরকার সম্প্রতি পেশাওয়ার আরবাব নিয়াজ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে "ইমরান খান ক্রিকেট স্টেডিয়াম" করার অনুমোদন দিয়েছে। তাদের যুক্তি, পাকিস্তানের ক্রিকেটকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যাওয়ার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবেই এই সম্মান জানানো হচ্ছে।
১৯৯২ সালে পাকিস্তানকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতানো ইমরান খান দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম আইকন। ক্রীড়া বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী, ইমরান শুধু একজন খেলোয়াড়ই নন, বরং একজন অনুপ্রেরণাদায়ী নেতা, যার হাত ধরে পাকিস্তান ক্রিকেটের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছিল।
তবে এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। স্টেডিয়ামের বর্তমান নামকরণ করা হয়েছিল আরবাব নিয়াজের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে, যা পেশাওয়ার মিউনিসিপাল কমিটি অনুমোদন করেছিল। আরবাব নিয়াজের ছেলে ও সাবেক রাজ্য প্রধান আরবাব শেহজাদ এই পরিবর্তনের তীব্র বিরোধিতা করে বলেছেন, "এটি শুধুমাত্র ইমরান খানকে খুশি করার রাজনৈতিক কৌশল।"
শেহজাদ আরও উল্লেখ করেন, ইমরান নিজেই জীবিত অবস্থায় কারও নামে সড়ক বা স্থাপনার নামকরণের বিরুদ্ধে ছিলেন। ফলে এই সিদ্ধান্ত তার নিজের নীতির বিরোধী হতে পারে।
অন্যদিকে, প্রাদেশিক ক্রীড়ামন্ত্রী সায়েদ ফখর জাহান বলেছেন, "স্টেডিয়ামের নামকরণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়। ইমরান খান পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নাম। তার প্রতি সম্মান জানানো উচিত।"
এই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে কি না, সেটি এখন সময়ই বলে দেবে। তবে একদিকে কিংবদন্তি ক্রিকেটারের প্রতি সম্মান, অন্যদিকে স্থানীয় পরিবারের ঐতিহ্য — এই দুইয়ের টানাপোড়েন পাকিস্তানি ক্রিকেটভক্তদের মনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।