প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি কলা খেলে যেসব উপকার পাবেন-
রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়: কলায় থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম। এই পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।বাড়তি ওজন কমে যায় কলা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ ও শর্করাসমৃদ্ধ। কলা খেলে পেট ভরা ভরা লাগে, খিদেও কমে যায়। ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া কমে এবং ওজন বাড়তে পারে না। এ ছাড়া কলা আমাদের রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ফেলে এবং ইনসুলিন হরমোনের প্রতি শরীরের সংবেদনশীলতা বাড়ায়। শরীর যদি ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীল না থাকে, তাহলে গ্লুকোজ ঠিকভাবে শোষিত হয় না। তখন অগ্ন্যাশয় থেকে আরও বেশি ইনসুলিন উৎপন্ন হতে থাকে। আর শরীরে বেশি ইনসুলিন থাকলে মানুষের ওজন বেড়ে যায়।
রক্তাল্পতার ঝুঁকি কমে: রক্তে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ কমে গিয়ে বা হিমোগ্লোবিন কমে গিয়ে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া রোগ হয়। অ্যানিমিয়া হলে শরীর ফ্যাকাশে লাগে, ক্লান্তিবোধ ও শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। কলায় থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। আয়রন রক্তে লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া কলায় থাকে ভিটামিন বি৬, যা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
পরিপাকের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: কলা আমাদের গ্যাস্ট্রো-ইনটেস্টাইনাল অঙ্গগুলোয় কোনো রকম প্রদাহ তৈরি না করে সহজেই পরিপাক হতে পারে। কলায় থাকে একধরনের প্রতিরোধী স্টার্চ, যা পরিপাক না হয়ে বৃহদন্ত্রে গিয়ে অবমুক্ত হয়। বৃহদন্ত্রে এই স্টার্চ স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার খাদ্যে পরিণত হয়। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে যেসব খনিজ পদার্থ বের হয়ে যায়, সেসব পূরণে কলার জুড়ি মেলা ভার।
মানসিক চাপ কমে: কলায় থাকে যথেষ্ট পরিমাণে ট্রিপ্টোফ্যান। ‘হাসি-খুশির হরমোন’ বা সেরোটোনিন তৈরিতে প্রয়োজন এই ট্রিপ্টোফ্যান। এ ছাড়া প্রতিটি কলায় গড়ে ২৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম থাকে। মন ভালো রাখতে ও ভালো ঘুমের জন্য এই ম্যাগনেশিয়াম খুবই প্রয়োজন।
ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হয়: আগেই বলেছি, কলা ভিটামিন বি৬-সমৃদ্ধ। গড়ে একটি কলা আমাদের ভিটামিন বি৬-এর দৈনন্দিন চাহিদার পাঁচ ভাগের এক ভাগ পূরণ করতে পারে। দেহে সুস্থ কোষ তৈরিতে প্রয়োজনীয় ইনসুলিন, হিমোগ্লোবিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড উৎপাদনে এই ভিটামিন বি৬ খুবই দরকার। আবার আমাদের ভিটামিন সির দৈনন্দিন চাহিদার ১৫ শতাংশ কলাই পূরণ করে।
শক্তি বৃদ্ধি পায়: কলায় থাকা পটাশিয়াম আমাদের মাংসপেশিতে ক্র্যাম্প হওয়া থেকে রক্ষা করে ও কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে। ফলে ভারী অনুশীলন করে শক্তিশালী হওয়া যায়।