নেত্রকোনার মদনে হাওরের সড়ক থেকে ২৪টি গরু লুটের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে এক বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে গরুগুলো উদ্ধার করেছে। গুরুগুলো প্রকৃত মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে মদন উপজেলায় গোবিন্দশ্রী গ্রামের সড়ক থেকে গরুগুলো লুট করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, নেত্রকোনার খালিয়াজুরী থেকে এক নারী পিকআপে করে তাঁর ১৯টি গরু নিয়ে আটপাড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে গোবিন্দশ্রী সড়কে পৌঁছালে স্থানীয় কিছু লোক পিকআপ থামিয়ে গরুগুলো নিয়ে যায়। একই দিন বিকেলে অপর এক ব্যক্তি পাঁচটি গরু পিকআপে করে খালিয়াজুরী থেকে নান্দাইল নিয়ে যাওয়ার পথে গোবিন্দশ্রী থেকে লুট হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা স্থানীয়দের নিয়ে উদ্ধার অভিযানে নামে। রাতে গোবিন্দশ্রী ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মান্নার বাড়ি থেকে ১৯টি গরু উদ্ধার করা হয়। বাকি গরুগুলো অন্য নেতাকর্মীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে।
গরুগুলো উদ্ধারে যৌথ বাহিনীকে সহায়তা করেন স্থানীয় জামায়াতের রোকন সদস্য দিলোয়ার হোসেন, জামায়াত কর্মী হাফেজ জাকারিয়া, রুমান মিয়া, আবুল বাশার, তৈয়মুল আলম বাপ্পি, গোবিন্দশ্রী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সম্রাট, বিএনপি নেতা আমজাদ হোসেন সুজাত, যুবদল নেতা জুসেফ আহমদ ভুট্টো ও ছাত্রদল নেতা আল-রাব্বী রবিন।
গোবিন্দশ্রী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সম্রাট বলেন, কয়েকদিন আগে খালিয়াজুরীতে যে সংঘাত হয়েছিল, এর জেরে তাদের গরু মনে করে যে যার মতো করে নিয়ে গিয়েছিল। পরে জানা গেছে এগুলো অন্যদের। পরে গরুগুলো দপ্তর সম্পাদক মান্নার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর জিম্মায় ছিল।
অভিযানে সহায়তাকারী দিলোয়ার হোসেন বলেন, লুট হওয়া গরুগুলোর মধ্যে ১৯টি বিএনপি নেতা মান্নার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। বাকিগুলো অন্যান্য নেতাকর্মীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকালে অনেক মানুষ হামলার চেষ্টা করেছিল।
গোবিন্দশ্রী ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মান্না বলেন, ‘ঝামেলা হওয়ার ভয়ে গরুর মালিক তাঁর বাড়িতে গরুগুলো রাখার জন্য আশ্রয় চেয়েছিলেন। আমি সেগুলো নিরাপদে রেখেছি। পরে শুনলাম তিনি আমার আত্মীয় হন। লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি।’
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, হাওরে ঘাস খাওয়াতে ভুক্তভোগী নারী তাঁর ১৯টি গরু খালিয়াজুরীতে এক আত্মীয়র বাড়িতে দিয়েছিলেন। সম্প্রতি সংঘর্ষ হওয়ায় ভয়ে গরুগুলো ফেরত নিয়ে যাচ্ছিলেন আটপাড়ায়। পথে গোবিন্দশ্রী এলাকায় পিকআপ থামিয়ে যে যার মতো করে গরুগুলো নিয়ে যায়। একই দিন অপর এক ব্যক্তি পাঁচটি গরু কিনে খালিয়াজুরী থেকে নান্দাইল নিয়ে যাচ্ছিলেন। একই এলাকায় পিকআপ থামিয়ে গরুগুলো কে বা কারা নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে সবগুলো গরু উদ্ধার করা হয়েছে।