ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ , ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ইত্যাদি’র মঞ্চে একঝাঁক প্রিয় মুখ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দোল পূর্ণিমা  আজ নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করল দিল্লি যুক্তরাষ্ট্রে বরখাস্ত কর্মীদের পুনর্বহালের নির্দেশ আদালতের এবার নারায়ণগঞ্জে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগের খবর কি? রামপুরায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে কক্সবাজার পৌঁছেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব ফরিদপুরে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীন এর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত গ্রিনল্যান্ডের দখল আমাদের লাগবেই : ট্রাম্প তাপপ্রবাহ ও বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে পাশে থাকবে জাতিসংঘ: আন্তোনিও গুতেরেস তিন মাসে কোটিপতি বেড়েছে ৫ হাজার মামলা থেকে স্বামীর নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণ, যুুুবক গ্রেপ্তার স্ত্রীকে বিদায় বলে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন স্বামী রোজায় মুরগিতে স্বস্তি, কমছে লেবু-শসা-বেগুনের দামও ক্ষোভে ফুঁসছে মাগুরাবাসী, ধর্ষকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিলো জনতা ট্রেনের টিকিট কাটতে আধ ঘণ্টায় ২০ লাখ হিট বান্ধবীর সঙ্গে ঘুমাচ্ছিলেন যুবক, গুলি করে দিল পোষা কুকুর! রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে মার্কিনিদের উদ্বেগ

তিন মাসে কোটিপতি বেড়েছে ৫ হাজার

  • আপলোড সময় : ১৪-০৩-২০২৫ ০২:২০:৫৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-০৩-২০২৫ ০২:২০:৫৪ অপরাহ্ন
তিন মাসে কোটিপতি বেড়েছে ৫ হাজার
সরকারের পালা বদলের পরে ব্যাংক খাত ঢেলে সাজাতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাতেগোনা কয়েকটি ব্যাংক ছাড়া অধিকাংশ ব্যাংকের গ্রাহকের আস্থা ফিরছে। এতে ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকা আবারও ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে। যার ফলে ব্যাংকে আমানতের পরিমাণও বেড়েছে। বিশেষ করে বিত্তশালীদের ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে। ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকার বেশি রয়েছে এমন গ্রাহকে ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বিগত তিন মাসে ৪ হাজার ৯৫৪টি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ৮১ টিতে।কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।



কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ৮১ টি। যা তিন মাস আগে গত সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ছিল ১ লাখ ১৭ হাজার ১২৭টি। সেই হিসেবে তিন মাসে কোটি টাকার ওপরে হিসাব সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ৯৫৪ টি। এর আগে গত বছরের জুন প্রান্তিকে কোটি টাকার বেশি আমানত ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪ টি।


খাত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা প্রায় ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এরপরই এক শ্রেণির ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে দিয়ে অতি মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছে। আবার সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে অনেক দুর্নীতিবাজ ও লুটপাটকারী অর্থ পাচার করতে পারছে না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সন্দেহভাজন অনেকের বাসায় হানা দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা উদ্ধার করেছে। এসব বিষয়ে বিবেচনা করে অনেক বড় গ্রাহক ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে শুরু করছে। যার করণে ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকার হিসাবের সংখ্যা বাড়ছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে  ব্যাংক খাতে মোট হিসাবের সংখ্যা ১৬ কোটি ৩২ লাখ ৪৭ হাজার ৫৩২টি। এসব হিসাবে মোট আমানতের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ২০ লাখ ২৮ হাজার ২৫৫টি। এসব হিসাবে জমা ছিল ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে তিন মাসে ব্যাংক খাতের হিসাব সংখ্যা বেড়েছে ১২ লাখ ১৯ হাজার ২৭৭টি আর আমানতের পরিমাণ বেড়েছে ৪৫ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার পাচারের বিরুদ্ধে কেঠোর অবস্থানে রয়েছে। যারা ঘরে টাকা রেখেছেন তাদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। সব মিলিয়ে অর্থ পাচার কমেছে। অন্যদিকে উচ্চ মুনাফার অর্থ ব্যাংকে রাখছে ফলে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে কোটি টাকা হিসাবের সংখ্যা বাড়ছে। আবার গত বছরের শেষ দিকে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে ছিল। ওই সময় এক শ্রেণির ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে দিয়ে অতি মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছে। একই সময় অন্তর্বর্তী সরকার অর্থ পাচার রোধে কঠোর অবস্থান নেয়। ফলে এখন দুর্নীতিবাজ ও লুটপাটকারী অর্থ পাচার করতে পারছে না। যার করণে বিভিন্ন উপায়ে তারা ব্যাংকে টাকা জমা করছে। পাশাপাশি গত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেশ কিছু ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থার চিত্রও প্রকাশ পায়। তাতে অনেক গ্রাহক আতঙ্কিত হয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেন। এখন আবার পরিস্থিতি বুঝে ব্যাংকের অর্থ জমা করছে ফলে সার্বিকভাবে আমানত বেড়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় কোটিপতি হিসাবেও বেড়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতিদের হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩ টি,১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪ জন, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২ টি,২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি। করোনারা সময় ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে এ আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টি। ২০২১ সালের ডিসেম্বর ১ লাখ ১৯৭৬ টি,২০২২ সালের ডিসেম্বর ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬ টি, ও ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮ টিতে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাব আছে।

কমেন্ট বক্স