স্পোর্টস হাব অথবা ভিলেজ, এই পরিকল্পনা বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের। নানা জটিলতার কারণে এতদিন সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। তবে এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহায়তায় দেশের ৮টি বিভাগে স্পোর্টস হাব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। রোববার (৬ এপ্রিল) জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে বিষয়টি জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় স্টেডিয়ামে দুটি প্রদর্শনী ম্যাচের আয়োজন করা হয়। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে বালক ও বালিকা, এই দুই বিভাগের দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচ শেষে পুরস্কার প্রদানের পর যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা প্রথম দিক থেকেই ভাবছিলাম সেন্ট্রাল জায়গা বা স্পোর্টস ভিলেজ করার। সংযুক্ত আরব আমিরাত সহায়তা করবে। যেহেতু আমরা ক্রীড়া বিকেন্দ্রীকরণের পরিকল্পনা করছি এজন্য দেশের ৮ বিভাগে স্পোর্টস হাব করবো।’
এই স্পোর্টস হাব নিয়ে চীনের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করে বাংলাদেশ। পরবর্তীতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি আরব আমিরাত সফরে এটি নিয়ে কাজ করেছেন। ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা স্যারকে আমরা বিষয়টি বলেছিলাম। স্যার যখন আরব আমিরাত সফরে গিয়েছিলেন তখন স্যারটি বিষটি আলোচনা করেন এবং আরব আমিরাত আমাদের এই বিষয়ে সহায়তা করতে চায়।’
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় স্পোর্টস হাব নিয়ে এখন বিস্তারিত কাজ করছে। ক্রীড়া উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে এই বিষয়ে ডিজাইনিং ও অন্য বিস্তারিত কাজ করছে। কী পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন সেটা আমরা জানাব। আশা করছি সামনের অর্থ বছরেই কাজ শুরু করতে পারব।’
খেলাধূলার জন্য বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান বিকেএসপি। সেই বিকেএসপি আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়াবিদ উপহার দিতে পারছে না। এ কারণে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া স্পোর্টস ইন্সটিটিউট করার পরিকল্পনা করছিলেন। এ নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন এবং সেই কমিটি প্রতিবেদনও দিয়েছে। স্পোর্টস ইন্সটিটিউটও কী এই অর্থায়ানে থাকবে নাকি আলাদা, সেটা অবশ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ক্রিকেট, শুটিং বাদে দেশের প্রায় সকল ফেডারেশনই জাতীয় স্টেডিয়াম এলাকায়। অনেক খেলারই ভেন্যু নেই এখানে, আবার অনেক ফেডারেশনের কার্যালয়ও নেই। এই সমস্যা সমাধানেরও আশ্বাস দিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা, ‘গুলশানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের একটি জায়গা ছিল যা বেদখল হয়েছিল। সেই জায়গার দালিলিক কিছু জটিলতা ছিল যেগুলো আমরা শেষ করেছি। সেখানে আমরা ইনডোর স্পোর্টস ফেডারেশনগুলোর অফিস বা স্পোর্টস ফ্যাসিলেট (খেলা আয়োজনের ব্যবস্থা) করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করছি।’
ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারের জন্য বিভিন্ন ফেডারেশন ও স্থানীয় পর্যায়ে অ্যাডহক কমিটি করছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। আরচ্যারি ফেডারেশনের কমিটি ঘোষণার পর সার্চ কমিটির আহ্বায়ক জোবায়েদুর রহমান রানা পদত্যাগের হুমকি দেন। এরপরই আবার কমিটি বদল হয়। সার্চ কমিটির সঙ্গে এনএসসি-মন্ত্রণালয়ের দূরত্ব এবং আরচ্যারি ফেডারেশনের কমিটি বদল নিয়ে ইতিবাচক কথা বলেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
‘এটা একটু সমন্বয়হীনতা রয়েছে। আমাদের একটা পলিসি সিদ্ধান্ত ছিল কেউ সর্বোচ্চ পদে দুই বারের বেশি নয়। এই আলোকে কমিটিতে পরিবর্তন হয়েছে। আমরা সমন্বয় করছি সার্চ কমিটির সঙ্গে। সার্চ কমিটির যে কার্যপরিধি তারা মন্ত্রণালয়কে কমিটিকে প্রস্তাবনা করবে। এটা প্রস্তাবনা চূড়ান্ত নয়, মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত করবে। এখানে অনেক বিষয় দেখতে হয়। অনেকের রাজনৈতিক পরিচয় কেউ পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত কিনা এগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়।’