শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে সংঘটিত এই ঘটনায় ককটেল বোমার বিস্ফোরণে একজন তরুণের হাতের কবজি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আরও একজন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষ— একদিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিঠুন ঢালী ও ইউপি সদস্য হালিম তালুকদারের অনুসারী, অপরদিকে নুর আলম সরদার ও জসিম তালুকদারের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। ওই দুই প্রভাবশালী নেতা বর্তমানে আত্মগোপনে থাকায় সংঘর্ষে নেতৃত্ব দেন তাদের ঘনিষ্ঠ অনুসারীরা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার দুপুরে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল বোমা নিয়ে মুখোমুখি হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হলে নুর আলম সরদারের অনুসারীরা প্রতিপক্ষের ওপর ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও হাতাহাতি হয় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় কিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে। সংঘর্ষের কিছু দৃশ্য স্থানীয় এক বাসিন্দার সিসিটিভিতে ধারণ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই পক্ষ বালতিভর্তি ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একে অপরকে ধাওয়া করছে।
জাজিরা থানার ওসি মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে একজন কিশোরকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এখন সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং টহল জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক।”
ওসি আরও জানান, এখনও কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে পুলিশ ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করছে।
এর আগে গত ৫ এপ্রিল জাজিরার বিলাশপুরে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই জয়নগরে ফের ককটেল বোমা ও সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা।