ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা পরিকল্পনা আটকে দিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প— এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে নিউইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে। মার্কিন প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও ঘনিষ্ঠ সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানায় সংবাদমাধ্যমটি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা করতে চেয়েছিল ইসরায়েল, যাতে তাদের পরমাণু কর্মসূচি অন্তত এক বছর পিছিয়ে দেওয়া যায়। তবে এই অভিযানে ইসরায়েলের প্রয়োজন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা ও কূটনৈতিক সমর্থন। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে কয়েক মাস ধরে আলোচনাও চলছিল।
তবে ট্রাম্প শেষপর্যন্ত হামলার অনুমতি না দিয়ে কূটনৈতিক পথ বেছে নেন। তার মতে, সামরিক আগ্রাসনের পরিবর্তে আলোচনার মাধ্যমে ইরানকে নিয়ন্ত্রণ করাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে বেশি কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদে ২০১৫ সালে জাতিসংঘ-সমর্থিত ইরান পারমাণবিক চুক্তি (জেসিপিওএ) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। এরপর তেহরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন এবং ইরানকে গোপনে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন।
তার এই পদক্ষেপের জবাবে ইরানও চুক্তির বেশ কয়েকটি শর্ত মানা বন্ধ করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়িয়ে দেয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, গত মাসেও ট্রাম্প ইরানকে হুমকি দেন, “চুক্তি না করলে বোমা হামলা হবে।” জবাবে ইরান জানায়, “তারা কোনো চাপের কাছে মাথা নত করবে না।”
তবে পাল্টাপাল্টি হুমকির মধ্যেই আলোচনার দ্বার খুলতে শুরু করেছে দুই দেশ। গত শনিবার ওমানের মাস্কাটে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রথম দফার আলোচনা হয়। আগামী ১৯ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার বৈঠক বসার কথা রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই আলোচনাগুলো যদি সফল হয়, তবে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা অনেকটাই কমে আসবে, এবং ইরান পারমাণবিক কার্যক্রমে একটি নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর মধ্যে ফিরে আসতে পারে।
Mytv Online