পরমাণুবিহীন, হাইড্রোজেনভিত্তিক এক বিধ্বংসী বোমার সফল পরীক্ষা চালিয়েছে চীন। দেশটির সামরিক বাহিনী পরিচালিত এই পরীক্ষার খবর সম্প্রতি প্রকাশ করেছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। এতে জানানো হয়, নতুন ধরনের এই বোমা পরীক্ষার পেছনে কাজ করেছে চীনা রাষ্ট্রীয় সংস্থা ‘চায়না স্টেট শিপবিল্ডিং কর্পোরেশন’-এর ৭০৫ নম্বর গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA)।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পরীক্ষিত বোমাটি হাইড্রোজেনভিত্তিক হলেও এটি কোনো ধরনের পারমাণবিক উপাদান ব্যবহার করে না। বরং এটি ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রাইড নামক পদার্থের মাধ্যমে ভয়াবহ রাসায়নিক চেইন প্রতিক্রিয়া ঘটায়। বিস্ফোরণের সময় এটি অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রার (১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) আগুনের গোলা তৈরি করে, যা প্রায় দুই সেকেন্ড ধরে জ্বলতে থাকে।
বিস্ফোরণের পর বোমাটি নিজে থেকেই হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে, যা বিস্ফোরণের তীব্রতা ধাপে ধাপে বাড়িয়ে তোলে। গবেষকদের দাবি, এই আগুন এতটাই প্রচণ্ড যে এটি অ্যালুমিনিয়ামের মতো ধাতুও গলিয়ে ফেলতে পারে। ফলে একটি বিস্তৃত এলাকাজুড়ে তীব্র ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম এই অস্ত্র।
চীন এই বোমাকে ‘ক্লিন এনার্জি অস্ত্র’ হিসেবে তুলে ধরছে, কারণ এতে পারমাণবিক উপাদান নেই এবং পারমাণবিক বোমার মতো বিকিরণজনিত দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কাও নেই। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, পারমাণবিক নয় বলেই এটি নিরাপদ—এমনটা ভাবার সুযোগ নেই। কারণ এর তাপমাত্রা ও ধ্বংসক্ষমতা রীতিমতো আতঙ্কজনক।
বিশ্বে অস্ত্র প্রতিযোগিতার আবহে চীনের এই উদ্ভাবন সামরিক দিক থেকে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেও, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রশ্নে নতুন উদ্বেগও তৈরি করেছে।