বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা ছাড়া একটি দেশের গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। রোববার (২৭ এপ্রিল) বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালাস পাওয়ার পর আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় ছড়িয়ে পড়া কথিত ফোনালাপের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় আমির খসরুসহ পাঁচজনকে খালাস দেন আদালত। রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আমির খসরু বলেন, "আমার বিরুদ্ধে ৪২টি মামলা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে সপ্তাহে দুদিন কোর্টেই সময় দিতে হতো। আজকে একটি রায়ের মাধ্যমে খালাস পেলাম, কিন্তু আরও অনেক মামলা এখনো ঝুলে আছে।"
তিনি বলেন, "বাংলাদেশে শুধু আমার না, বিএনপির ৬০ লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। অনেককে গুম, খুন করা হয়েছে। বাড়িঘর ছাড়তে, চাকরি-ব্যবসা ত্যাগ করতে হয়েছে।" ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, "এই ক্ষতির ক্ষতিপূরণ কে দেবে? রাষ্ট্র কি কোনো ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছে? তাদের ত্যাগের মূল্য কে দেবে?"
বিচার বিভাগের কাঠামো নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, "আমরা চাই মুক্ত ও স্বাধীন বিচার বিভাগ। ১৫-১৬ বছর ধরে আমরা যে লড়াই করেছি, তা হলো এমন একটি বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য যেখানে মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্রের অস্তিত্ব সম্ভব নয়।"
বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠনের প্রশ্নে তিনি বলেন, "এটা আমাদের প্রস্তাবনা। এখন যদি বাস্তবায়ন না হয়, ভবিষ্যতে আমরা সরকারে এলে অবশ্যই বাস্তবায়ন করবো।"
উল্লেখ্য, মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব বাসচাপায় নিহত হন। এরপর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। এ সময় আমির খসরুর একটি কথিত ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে ৫ আগস্ট রাজধানীর শাহবাগ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছিল।