বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং সাংবাদিকতার জবাবদিহি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত ‘সাহসী নতুন বাংলাদেশ: গণমাধ্যমের স্বাধীনতার রোডম্যাপ সংস্কার’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহফুজ আলম বলেন, “গণমাধ্যমে যেমন স্বাধীনতা দরকার, তেমনি থাকা উচিত জবাবদিহি। সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার সুযোগ থাকতে হবে। তারা প্রশ্ন করেন, অন্যদেরও তাদের প্রশ্ন করা উচিত।”
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে তিনি বলেন, “সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছে। অনেক সময় যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল, তাদের বিরুদ্ধে সেসব অভিযোগে মামলা হয়নি—বরং হয়েছে হত্যা মামলা। এতে ন্যায়বিচার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, জনগণের ক্ষোভও তৈরি হয়েছে। এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।”
তিনি মামলাবাজিকে দেশের ‘পুরোনো রাজনৈতিক সংস্কৃতি’ বলে আখ্যা দেন। তার ভাষায়, “বাংলাদেশে শুধু সরকারই ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে নেই, স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তিও মামলা দিয়ে প্রভাব বিস্তার করে। এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে বিচার ও প্রশাসনিক সংস্কার জরুরি, না হলে গায়েবি মামলা, ধরপাকড় চলতেই থাকবে।”
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “সাংবাদিকতার স্বাধীনতা মানে সবকিছু লিখতে পারার স্বাধীনতা। এখন কেউ আসাদুজ্জামান নূরকে নির্দোষ বলছে, কেউ বলছে তিনি গুম-হত্যায় জড়িত। সত্য উদঘাটনের দায় সাংবাদিকদের। সরকার কিছু লিখতে বাধা দিচ্ছে না।”
তিনি জানান, সাংবাদিকদের জন্য একটি সুরক্ষা আইন তৈরির কাজ চলছে। সেই সঙ্গে বেতার, বিটিভি ও বাসসকে নিয়ে একটি জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা গঠনের পক্ষে তিনি মত দিয়েছেন। সরকারি বিজ্ঞাপন ও লাইসেন্স ফি নির্ধারণ নিয়েও কাজ চলছে।
সবশেষে মাহফুজ আলম বলেন, “গণমাধ্যমে জবাবদিহি না থাকলে তার বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না। বিগত ১৫ বছরে গণমাধ্যম কী ভূমিকা রেখেছে, তা নিয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং জরিপ প্রয়োজন। সাংবাদিকরা রাজনীতিকরণে জড়িয়ে নিজেরাই ক্ষতির মুখে পড়েছেন।”